862
Published on মার্চ 25, 2021আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মুখে মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেও একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে একটি কথাও বলে না বিএনপি। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতন নিয়ে বিএনপির মুখে কিছু শোনা যায় না। তারা শুধু সরকারের সমালোচনায় ব্যস্ত। পাক হানাদারদের গণহত্যার বিষয়টি নিয়ে কিছু না বলে বরং এর পক্ষে সাফাই গায় কি না সে নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের ন্যাক্কারজনক নীরবতা পাক হানাদারদের পক্ষে তাদের অবস্থানকে স্পষ্ট করে।’
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভায় তিনি তার বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। তিনি বলেন, ইতিহাসের এই বর্বরোচিত গণহত্যা এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়নি। স্বাধীনতার এত বছর পার হলেও পাকিস্তান একাত্তরের নৃশংস, বর্বরোচিত গণহত্যার জন্য আজও দুঃখ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিএনপি যে কর্মসূচি নিয়েছিল, করোনার অজুহাত দেখিয়ে তারা তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ২৬ মার্চকে সামনে রেখে ইতিহাসের অনেক মীমাংসিত সত্যের মুখে তারা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়বে বলে আজকে ২৫ মার্চ ও ২৬ মার্চ পালন না করে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
সাংগঠনিক শক্তি অর্জন করা ছাড়া আওয়ামী লীগের আর কোনো পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, এখানে ‘আমার লোক’ বানিয়ে কোনো লাভ নাই। এটা প্রাইভেট কোম্পানি নয়, এটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার আদর্শের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। তাই আওয়ামী লীগের ভেতরে যে হাইব্রিডরা ঢুকে পড়েছে তাদের চালুন চালে ঝেড়ে-মুছে বের করে দিতে হবে। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের সকল পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা ক্ষয়িঞ্চু শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাদের ভুল রাজনীতির কারণে তারা রাজনীতির আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়ে এখন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের পথ ধরে হেঁটে আবার তারা সাম্প্রদায়িকতাকে উসকানি দিচ্ছে।’
সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে তারা দেশের স্বাভাবিক অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে চায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির উন্নয়নের পথকে রুদ্ধ করতে চায় বলে দাবি করেন নানক। কাল ২৬ মার্চ বাংলাদেশের সেই ঐতিহাসিক ক্ষণ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি। তাই সকল নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি প্রতিটি মসজিদে জুম্মার নামাজের পর বিশেষ দোয়ার অনুরোধ করেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা যতই চেষ্টা করুক না কেন, আমাদের বলিষ্ঠ নেতা, আমাদের বিচক্ষণ নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং এগিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে আমার লোক বানানোর কোনো চেষ্টা করবেন না। এখানে আমার লোক কে? আজকে আমি প্রেসিডিয়ামের মেম্বার আছি; এই আমি যদি আগামীবার প্রেসিডিয়াম মেম্বার না থাকি তাহলে আমার কে কে থাকবেন, বলেন তো? কেউ থাকবে না? রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে সালামটাও হয়তো দেবেন না? এই উপলব্ধি থাকতে হবে। এখানে আমার লোক বানিয়ে কোন লাভ নেই। আওয়ামী লীগ প্রাইভেট কোম্পানি নয়, এটি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।’
তিনি বলেন, ‘সেই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে যারা দুঃসময় ও দুর্দিনে নেতা ছিলেন, যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের যোগ্যস্থানে বসানোর দায়িত্ব আমাদের। আর এই পবিত্র দায়িত্বকে যদি অবহেলা করেন, কার্পণ্য করেন, তাহলে তিনিও রাজনীতির আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন।’ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রার চিত্র এবং পাকিস্তান সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরেন নানক।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয় প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। সভা পরিচালনা করেন দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।