বঙ্গবন্ধুর নামে কটুক্তি ও বিএনপির উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশ

1349

Published on মার্চ 10, 2021
  • Details Image

বিএনপি কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নামে কটুক্তি এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা কে প্রাণনাশের হুমকি এবং দেশ নিয়ে অব্যাহতভাবে মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগর কর্তৃক আজ মঙ্গলবার বেলা ৩:০০ টায় নগরীর বাটারমোড়, রাণীবাজারে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি ও রা.সি.ক মাননীয় মেয়র জননেতা এ. এইচ. এম. খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জননেতা মোঃ ডাবলু সরকার এর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ জননেতা আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এম.পি, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জননেতা এস. এম. কামাল হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে আর কখনও বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না। বরং বিএনপি নামের দলটিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ জনগণ কখনও তাদের সমর্থন করবে না। যাদের জন্ম খুনের মধ্য দিয়ে, যাদের চেতনার মধ্যে রক্ত-তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন। জিয়াউর রহমান শুধু বঙ্গবন্ধু খুনের সাথেই নয়, কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চারনেতার হত্যাকাণ্ডের সাথেও জড়িত।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা দেশের যে উন্নয়ন করেছেন, তা দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এ কারণে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশের জনগণ। সম্প্রতি পৌরসভা নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগের পক্ষে রায় দিয়েছেন। আর এসব দেখে বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি বিষোদগার করছেন। তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। শেখ হাসিনাকে এর আগে ২১ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁকে রক্ষা করেছেন। তাই আমরা শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিতে বিচলিত নই। বিএনপি পূর্বের ন্যায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করছে। কিন্তু জনগণ আমাদের পাশে আছেন। বিএনপির এসব অপতৎপরতার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস. এম. কামাল হোসেন বলেন, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়ত জোট সারাদেশে কী করেছে তা দেশের জনগণ জানেন। আপনারা সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। মিনু আপনার দলের নেতাকর্মীরা সে সময় সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছেন। কিন্তু আপনারা সফল হননি। এস. এম কামাল হোসেন বলেন, যারা বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিতে চায়, তারাই শেখ হাসিনাকে হমকি দিচ্ছেন। তারাই তারেক জিয়ার নেতৃত্বে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটাতে চেয়েছিলেন। সে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। একারণেই বিএনপি নেতা মিনু আবারও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সতর্ক আছে। শেখ হাসিনা আমাদের অস্তিত্ব। আমরা যদি বলি আপনারা (বিএনপি) ঘর থেকে বের হবেন না, তাহলে হতে পারবেন না। এর জন্য পুলিশ লাগবে না। আপনাদের ঘরে বন্দি রাখতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই যথেষ্ট।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি সমাবেশ করতে চেয়েছিল। সরকার মনে করেছে কথা বলার অধিকার আছে, সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু আমরা দেখলাম কুকুরের লেজ কখনও সোজা হয় না। ছেড়ে দিলেই কয়েল হয়ে যায়। আর কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। বিএনপি আসলে কোন দলই না। রাজনৈতিক শিষ্টাচার থাকলে তারা এভাবে কথা বলতে পারতেন না। বিএনপি নেতা মিনুকে উদ্দেশ্য করে লিটন বলেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘তুমি’ করে কথা বলেন! ভাগ্য ভাল আপনার জিহ্বাটা ছিঁড়ে ফেলা হয়নি। আমরা সেটা পারি।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলার সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন এম.পি, সংরক্ষিত নারী আসনের এম.পি আদিবা আনজুম মিতা, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি মোঃ রমযান আলী, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জেডু সরকার, রাজশাহী মহানগর কৃষক লীগের সভাপতি মোঃ রহমতুল্লাহ সেলিম, রাজশাহী মহানগর যুব মহিলা লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইসমত আরা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রহমান নিবিড় প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। এই বক্তব্যের জন্য মহানগর আওয়ামী লীগ মিনুকে ক্ষমা চাইতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। নইলে মামলা করারও ঘোষণা দেয় নগর আওয়ামী লীগ। আল্টিমেটামের ৭২ ঘণ্টা পর মিনু গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়ে নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে সাবেক এই মেয়র ক্ষমা চাননি। ক্ষমা না চাওয়ায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মিনুসহ বিএনপির চার নেতার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করা হয়েছে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত