2352
Published on মার্চ 7, 2021ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের অনন্য স্থাপনা শিখা চিরন্তন থেকে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণ পর্যন্ত র্যালি করেছে ছাত্রলীগ।
রবিবার (৭ মার্চ) সকাল ১১টায় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত থেকে এ র্যালিতে অংশ নেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ সহ কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
র্যালি শেষে ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ও গৌরবের দিন। আজ গৌরবোদ্দীপ্ত এই দিনে বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। দীর্ঘ ২৪ বছরের লড়াই-সংগ্রামের পর বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের সেই ভাষণের পরিণতি আমাদের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।’
তিনি আরো বলেন, ‘মূলত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতা-মুক্তি ও জাতীয়তাবোধ জাগরণের মহাকাব্য, বাঙালি তথা বিশ্বের সকল নিপীড়িত, বঞ্চিত, মুক্তিকামী মানুষের মুক্তির সনদ, যা যুগ যুগ ধরে বিশ্বের মানুষকে অধিকার আদায়ের মন্ত্রণা শিখিয়ে যাবে, অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে। যত দিন যাবে প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে ৭ই মার্চের ভাষণ অনুপ্রেরণার সারথি হিসেবে কাজ করবে।’
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির জীবনে অনুপ্রেরণার অনির্বাণ শিখা হয়ে অফুরন্ত শক্তি ও সাহস যুগিয়ে আসছে। যখনই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি শোনে তখনই তাদের মানসপটে ভেসে ওঠে স্বাধীনতার গৌরবগাঁথা আন্দোলন-সংগ্রামের মুহূর্তগুলো, আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের আদর্শে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কালজয়ী ৭ই মার্চের এই ভাষণ বিশ্বের শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত ও মুক্তিকামী মানুষের কাছে প্রেরণার উৎস। এবার মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর শুভক্ষণে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বাঙালির মন ও মননে, চিন্তা-চেতনায়, আদর্শ-অনুপ্রেরণায় প্রদীপ্ত শিখা রূপে প্রবাহিত হয়ে যুগ যুগ ধরে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’
উল্লেখ্য, বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা গৌরবের এক অনন্য দিন আজ। ৫০ বছর আগের এ দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে গর্জে উঠেছিল উত্তাল জনসমুদ্র।
লাখ লাখ মানুষের গগনবিদারী স্লোগানের উদ্দামতায় বসন্তের মাতাল হাওয়ায় সেদিন পত পত করে উড়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল-সবুজের পতাকা। মূলত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল।
প্রকৃতপক্ষে, জাতির উদ্দেশে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ঐ ভাষণই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার আহ্বানের অধীর অপেক্ষায় ছিল বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। স্লোগান ছিল ময়দানজুড়ে ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’।