2893
Published on মার্চ 6, 2021জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতা-মুক্তি ও জাতীয়তাবোধ জাগরণের মহাকাব্য, বাঙালি তথা বিশ্বের সকল লাঞ্চিত-বঞ্চিত নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির সনদ। ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের চূড়ান্ত প্রেরণা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণিক দলিল এবং বিশ্বে সর্বাধিকবার প্রচারিত ও শ্রবণকৃত ভাষণ।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাঙালি জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি অবিস্মরণীয় দিন। এই দিনে তৎকালীন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক উত্তাল জনসমুদ্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর বজ্রনির্ঘোষ কণ্ঠে বলেন, ‘‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। এই ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচর-নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহান মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন। বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রাম জনযুদ্ধে পরিণত হয়। ঐতিহাসিক এই ভাষণে উদ্দীপ্ত হয়ে ৯ মাসের বীরত্বগাঁথা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এক সাগর রক্ত আর ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা। বিশ^ মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র।
১৯৭০ সালে বাঙালির প্রাণপ্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক শাসকগোষ্ঠী বিজয়ী আওয়ামী লীগ তথা বাঙালিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে নানামুখী ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়। প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য ছিল, যে কোনভাবে পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু ১ মার্চ এ অধিবেশন অপ্রত্যাশিতভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য মূলতবি ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২ ও ৩ মার্চ সারা দেশে হরতাল পালন করে।
এই পটভূমিতে ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতায় তাঁর বলিষ্ঠ কণ্ঠে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণটি বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে এবং বাঙালি জাতির অনুপ্রেরণার অনির্বান শিখা হয়ে অফুরন্ত শক্তি ও সাহস যুগিয়ে আসছে। একইসাথে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ‘‘বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল” হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ‘মুজিব বর্ষ’ এবং ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’র শুভক্ষণে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বাঙালির মন-মননে চিন্তা-চেতনায় আদর্শ-অনুপ্রেরণায় স্বপনে-জাগরণে প্রদীপ্ত শিখা রূপে প্রবাহিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের স্মৃতি-বিজড়িত ৭ই মার্চ উপলক্ষে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
৭ মার্চ ২০২১ রবিবার
ভোর ৬-৩০ মিনিট : বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন।
সকাল ৯ টায় : বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।
৮ মার্চ ২০২১ সোমবার
বিকেল ৩ টা : আলোচনা সভা। স্থান : ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়।
সভাপতিত্ব করবেন : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি (ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখবেন)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ৬ মার্চ ২০২১