একাদশ জাতীয় সংসদের ২ বছর পূর্তি ও গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা

1283

Published on ডিসেম্বর 30, 2020
  • Details Image

“উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে।” এই স্লোগনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে একাদশ জাতীয় সংসদের ২ বছর পূর্তি ও গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার বেলা ৩টায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চলমান রাজনীতি ও সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচী নিয়ে সভাপতির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার। সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী, যুগ্ম সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আসলাম সরকার, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, নগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম।

সভায় এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বক্তব্যের প্রারম্ভে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সকল সদস্য, কারাভ্যন্তরে শহীদ জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদ ও দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ এবং আজকের এই গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য বহু প্রাণ দিতে দিয়েছে, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালী জাতিকে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন একটি দেশ উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা কি দেখলাম! স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন তার প্রিয় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করলেন দেশের সূর্য সন্তানরা যে অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলো, তারা বঙ্গবন্ধুর কাছে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করেছিলো। কিন্তু পরাজিত পাকিস্তানিদের দালাল, রাজাকার ও আলবদরা তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলো। সেই অস্ত্র দিয়ে তারা দেশে হত্যা, খুন, লুন্ঠন ও রাহাজানি করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলো এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যকান্ডের প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করে ১৫ আগস্টে কালো অধ্যায় রচনা করে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই বিজয় সহজে আসে নি। আমাদের যে বিজয়, সেই বিজয়কে সংহত করার জন্য আজকের দিবস আমরা পালন করছি। আর এই বিজয় যাতে না থাকে সেই জন্য রাজাকার, আলবদর, বিএনপি, জামায়াত সেদিনও তৎপর ছিলো, আজও তৎপর আছে। তাদের নাম যাই হোক আগে ছিলো মুসলিম লীগ, তারপরে নেজামে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী, হেয়াজতে ইসলামী, জেএমবি বা যেই নামেই হোক না কেন তাদের শেকড় কিন্তু একটাই তা হলো বিএনপি, এরা বাংলাদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে কখনই বিশ্বাস করে না। তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের সভা ও সমাবেশের লোকজন দেখে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।

তিনি ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বিএনপি ভেবেছিলো তারা যা বলবে, তাই ঠিক। বাংলাদেশে কেউ জয় বাংলা বলবে না, কেউ জয় বঙ্গবন্ধু বলবে না। তারা ভেবেছিলো জিয়াউর রহমান যা বলবেই তাই হবে। খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া যা বলবে, তাই হবে। এই ভেবে তারা আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো কিন্তু তারা পারে নি। এদেশের মুক্তিকামী মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে দেশের তরে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জিবীত হয়ে তাদের সন্তানদেরকে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিতে উদ্বুদ্ধ করেছিলো।

তিনি বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র উন্নয়ন কর্মসূচী তুলে ধরে বলেন, দেশে আজকে পদ্মা সেতু হয়েছে নিজস্ব অর্থায়নে। এই পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। মেট্রো রেল, কর্ণফুলি নদীর উপরে বঙ্গবন্ধু টানেল, দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ, সহ বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন, শিক্ষা, ক্রীড়া, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হয়েছে। তিনি রাজশাহীবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রসঙ্গে বলেন, ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সাড়ে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। যার ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়েছে। অচিরেই তার নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র সহায়তায় রাজশাহীতে অতি দ্রুত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। রাজশাহী বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করে তোলার জন্য ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গেছে। খেলাধুলার মানোন্নয়নের জন্য রাজশাহীতে বিকেএসপি স্থাপন করা হবে। রাজশাহীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র সহযোগিতা নিয়ে রাজশাহীকে ঢেলে সাজানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি বিএনপি-জামায়াতকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, জনগণ আপনাদেরকে প্রত্যাখান করেছে। তাই আপনারা রাজপথের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে বেছে নিয়েছেন, আপনারা রাজপথে আসুন। আমরা আপনাদেরকে প্রতিহত করতে প্রস্তুত।

মোঃ ডাবলু সরকার বলেন, নৌকায় ভোট দেওয়ার ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদশের জনগণের সামনে বিভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। তিনি বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলার গ্রাম পর্যন্ত শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছেন। দেশের চিকিৎসা সেবা আজ আগের মতো নাই, চিকিৎসা সেবা আজ ব্যাপক উন্নত হয়েছে। পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান হয়েছে, বছরের শুরুরে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বই পাচ্ছে, দেশের তরুণ বেকারদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্ম-কর্মস্থান সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এটাই হলো গণতন্ত্রের বিজয়।

তিনি আরও বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলবে, বিতর্ক সৃষ্টি করবে। রাজশাহীতে তাদের স্থান হবে না।

সন্ধ্যা ৬.৩০টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আতশবাজি’র মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উদযাপন করেন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত