1651
Published on ডিসেম্বর 20, 2020দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে পদ্মা সেতু নির্মান করায় বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু আর স্বপ্ন নয়। মানুষ যেয়ে নিজের চোখে দেখে আসছে পদ্মা সেতু। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার তিন কোটি মানুষের যাতায়াত, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর নির্মাণের ফলে যেভাবে উত্তর অঞ্চল থেকে মঙ্গা দুর হয়েছে। পদ্মা সেতুও দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা ১৩ ডিসেম্বর রবিবার ঢাকায় শিশু একাডেমি মিলনায়তন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় বাস্তবায়িত “উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর, বিশেষত নারীদের, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবনাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতাবৃদ্ধিকরণ” প্রকল্পের কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, সরকার উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের জীবিকা ও কর্মসংস্থানকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। অভিযোজন সক্ষমতাবৃদ্ধিকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের জলবায়ু সহিষ্ণু জীবিকায়ন হবে। তাদের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। বছরজুড়ে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবারহ নিশ্চিত করা যাবে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর একটি বাংলাদেশ। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কোন দায় বাংলাদেশের নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে স্বাদু পানির এলাকাসমূহে লবনাক্ত পানির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। লবণাক্ত পানির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। নারীরা কর্মসংস্থান হারাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা আরো বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর জলবায়ু সহনশীল জীবিকা এবং পানীয় জলের সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার, গ্রীণ ক্লাইমেট ফান্ড এবং ইউএনডিপি এর সহায়তায় “উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর, বিশেষত নারীদের, জলবায়ু পরিবর্তণ জনিত লবনাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ” প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। উপকূলীয় দরিদ্র মানুষের জলবায়ুর অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উক্ত প্রকল্প নিশ্চিতভাবে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলার জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভীন আকতার এবং খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
কর্মশালায় সচিব কাজী রওশন আক্তার বলেন, প্রকল্পটি উপকূলীয় এলাকার নারীদের জীবন-মান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখবে। এর ফলে বিপদাপন্ন নারীরা জলাবায়ু সহনশীল জীবিকা নির্বাহে সক্ষমতা অর্জন করবে।
উল্লেখ্য, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর, বিশেষত নারীদের, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবনাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতাবৃদ্ধিকরণ” প্রকল্পটি খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৫টি জেলায় ৩৯ টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যার সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৭ লাখ ১৯ হাজার ২২৯ জন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৩ হাজার নারীকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাঁকড়া চাষ, কাঁকড়া নার্সারী, কাঁকড়া ও মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ, জলচাষ (Hydroponic), গৃহস্থালী পর্যায়ে সবজী চাষ, তিল চাষ, লবণাক্ততা সহিষ্ণু নার্সারী বিষয়ে প্রশিক্ষন প্রদান করা হবে। নারী উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ ও বিপণন ব্যবস্থায় সহায়তা করা হবে। এই প্রকল্প থেকে ১০১টি আবওয়া হাওয়া পূর্ব সতর্কীকরণ নারীদল গঠন, ১৩৩০৮ টি খানা ভিত্তিক বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থপনা, ২১৮ টি কমিউনিটি, ১৯ টি প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থপনা এবং ৪১ টি পুকুরভিত্তিক পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে।
এই কর্মশালায় বিভিন্ন প্রকল্পের সরকারী কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউএনডিপির প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও এনজিও প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।