4192
Published on নভেম্বর 15, 2020কৃষিক্ষেত্রে আরও উন্নত গবেষণা এবং বৈশি^ক জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল খাদ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতে গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশে ‘বঙ্গবন্ধু পিয়েরে ট্রুডো কৃষি গবেষণা কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এছাড়া কানাডার সাসকাচেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি (জিআইএফএস)-এ ‘বঙ্গবন্ধু রিসার্চ চেয়ার’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞতিতে এসব কথা জানানো হয়। অটোয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কানাডার একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি গবেষণা চেয়ার স্থাপন এবং কানাডার সহযোগিতায় বাংলাদেশে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এসব উদ্যোগ ও প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক, গবেষণা কার্যক্রম, প্রযুক্তি বিনিময়, উন্নয়ন সহায়তা বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে সাসকাচেওয়ানে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে তিনি এই কেন্দ্রটির নাম ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি গবেষণা কেন্দ্র’ করার প্রস্তাব করেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সাসকাচেওয়ান প্রদেশের কৃষিমন্ত্রী ডেভিড মেরিটের ঢাকা সফরের সময় জিআইএফএস ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমঝোতা স্মারকের পরে, কৃষি উন্নয়ন, খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ ও পরিবেশ বিপর্যয় মোকাবেলায় কানাডা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগ হিসাবে বাংলাদেশে এই গবেষণা ইনস্টিটিউটটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অটোয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন ২০২০ সালের ৯ নবেম্বর কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনে সামগ্রিক অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করে। সভায় কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র (আইডিআরসি), জিআইএফএস ও বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা যোগ দেন।
সভায় কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালযের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ডেভিড হার্টম্যান জানান, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির নাম পাল্টে ‘বঙ্গবন্ধু পিয়েরে ট্রুডো কৃষি গবেষণা কেন্দ্র’ নামকরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। তিনি দুদেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক উন্নয়নে কানাডা সরকারের আগ্রহের কথাও উল্লেখ করেন।
কানাডার কৃষি ও কৃষি-খাদ্য বিষয়ক উপমন্ত্রী ক্রিস ফোর্বস দুদেশের মধ্যে কৃষি গবেষণা ও কৃষিপণ্যের বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রউফ, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এস এম বখতিয়ার, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কৃষি বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গিয়াসউদ্দিন মিয়া, জিআইএফএসের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ড. স্টিভেন ওয়েব, স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের ডিরেক্টর স্টিভ ভিশার, খাদ্য ব্যবস্থা বিভাগের পরিচালক সান্টিয়াগো আলবা কোরাল ‘বঙ্গবন্ধু পিয়েরে ট্রুডো কৃষি গবেষণা কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার পটভূমি, কার্যক্রম, গুরুত্ব ও ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন। হাইকমিশনার মিজানুর রহমান তার বক্তব্যে রাজনীতি, বাণিজ্য, গবেষণা সহযোগিতা ও জনগণ-জনগণ সংযোগ বৃদ্ধির আলোকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে হাইকমিশনের কাজের সাফল্যের অংশ হিসেবে সাসকাচেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু গবেষণা চেয়ার স্থাপন এবং বঙ্গবন্ধুর নামে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রটির নামকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বৈশি^ক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে কৃষিতে আরও উন্নত গবেষণা পরিচালনা, বাংলাদেশে উন্নত প্রযুক্তি বিনিময় এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে কেন্দ্রটি খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি উল্লেখ করেন যে এই গবেষণা কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠার ফলে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক এবং কানাডা থেকে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়বে।