2950
Published on নভেম্বর 10, 2020দলিল হওয়ার সর্বোচ্চ আটদিনের মধ্যেই নামজারি করার মাধ্যমে জনগণের হয়রানি লাঘবে ‘জমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি কার্যক্রম সমন্বয় সাধনের প্রস্তাব’ অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সকালে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা বিভাগের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, এই অনুমোদনের ফলে নতুন জমির ক্রেতা সর্বোচ্চ আটদিনের মধ্যে মিউটেশন, পর্চা এবং নামজারি সম্পন্ন করতে পারবে। খবর বাসসের
তিনি বলেন, এর রেকর্ড কারেকশনের দায়িত্ব এসিল্যান্ডের ওপর বর্তাবে। এ ব্যাপারে এসিল্যান্ড প্রতি মাসেই তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে রিপোর্ট পেশ করবেন, কতগুলো মিউটেশন হলো এবং কতগুলো রেকর্ড কারেকশন হলো ইত্যাদি।
সচিব বলেন, আজকের বৈঠকে এ সম্পর্কে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাকে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলা যেতে পারে। এটা দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিনিয়োগকারী সবাইকে বড় রকমের একটা পরিত্রাণ দেবে। নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা হলো এবং এর ফলে মামলা মোকদ্দমাও অনেকাংশে কমে আসবে বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, মানুষের হয়রানি রোধকল্পে জমি রেজিস্ট্রেশন এবং মিউটেশনের বিষয়গুলোকে আরও স্বস্তিদায়ক করতে এবং জটিলতা নিরসন করে এ বিষয়ে সময় কমিয়ে আনতে অনেকদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রচেষ্টা চলছিল।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমানে ভূমি রেজিস্ট্রেশন হয় আইন মন্ত্রণালয়ের অধিনে থাকা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনের উপজেলা সার্কেল ভূমি অফিস থেকে। দুইটি ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকায় এখানে সবসময় সমন্বয় সাধনটা কষ্টকর ছিল। এ কারণে একটি দীর্ঘসূত্রিতা থাকার পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশনেও একটা অস্পষ্টতা ছিল।
তিনি বলেন, নতুন নিয়মে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস এবং এসিল্যান্ড অফিসের মধ্যে একটি ইন্টারকানেকটেবল সফটওয়্যার থাকবে। এই যোগাযোগের ফলে একজন আরেকজনের ডাটাবেজে ঢুকতে পারবেন। দলিল করার আগেই সফটওয়্যারের মাধ্যমে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি বা এসিল্যান্ড) কার্যালয় থেকে জমির তথ্য জেনে নেবেন সাব-রেজিস্ট্রার। একইভাবে দলিলের পর সেই তথ্য এসিল্যান্ডকে জানিয়ে দেবেন। তখনই এসিল্যান্ড নামজারি করে দেবেন।
‘যিনি দলিল করতে যাবেন তাকে তিনটি দলিল করতে হবে, (আগে ছিল দুইটি) একটা সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে থাকবে, একটি আবেদনকারী পাবে, অপরটি এসিল্যান্ডের কাছে চলে যাবে। কজেই এসিল্যান্ড অটোমেটিক্যালি সফটওয়্যারের মাধ্যমে মিউটেশন সম্পন্ন করতে পারবেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, এখন দেশের ১৭টি উপজেলায় এই কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে, পর্যায়ক্রমে এক বছরের মধ্যে সারাদেশেই এটি হয়ে যাবে। ফলে মামলা ও অনিয়ম কমার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বণ্টন ও নামজারির কাজটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হবে। তবে এই কাজ শুরু হতে আরও পাঁচ থেকে ছয় মাস লাগবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরাধিকার সম্পত্তি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও যেন ঠিকমতো পান, সেটি নিশ্চিত করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বৈঠকে আবারও মাস্ক ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় বলে জানান সচিব। এছাড়া ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট: বাংলাদেশ অগ্রগতি প্রতিবেদন-২০২০’ সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।