কর্ণফুলী নদী দখল-দূষণমুক্ত করতে আইনের প্রয়োগ চান নগর আওয়ামী লীগের নেতারা

1973

Published on অক্টোবর 18, 2020
  • Details Image
  • Details Image
  • Details Image

শনিবার (১৭ অক্টোবর) নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কর্ণফুলী নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করার প্রত্যয়ে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে । কর্ণফুলী নদী বাঁচানোর আন্দোলন জাতীয় ইস্যু উল্লেখ করে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, এ নদীকে দখল-দূষণমুক্ত করতে আইনের প্রয়োগ প্রয়োজন। সাবেক সিটি মেয়র নাছির বলেন, নদী-মাতৃক বাংলাদেশের ১৩ শ’ নদ-নদীর মধ্যে অনেক নদী আজ বিলীন হয়ে গেছে। কর্ণফুলীসহ যেসব নদ-নদী এখনো বহমান, সেগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম হলেও এসব নদ-নদী যৌবন হারিয়েছে।

তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদীর দখল ও দূষণের ফলে গভীরতা ও প্রশস্ততা হ্রাস পেয়ে ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় কর্ণফুলী নদীর অতীত স্বাভাবিক প্রবহ ও যৌবন ফিরিয়ে আনতে না পারলে বিশ্বের অন্যতম প্রাকৃতিক বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দর ধ্বংসের মুখে পড়বে।

‘কর্ণফুলী না বাঁচলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারই শুধু হবে না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তা কিছুতেই রক্ষা করা যাবে না। ’ নাছির বলেন, কর্ণফুলীকে দখল ও দূষণমুক্ত করার আন্দোলন কোনো আঞ্চলিক ইস্যু নয়, এটি একটি জাতীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের অঙ্গীকার। এক সময় বাংলাদেশের নদ-নদীগুলো ছিল লোকজ, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক উৎসব পার্বনের আনন্দঘন উদযাপনের উৎস্যকেন্দ্র। নৌকাবাইচ হল তারই একটি অন্যতম উপাদান।

তিনি বলেন, দেশের ১৩ শ’ নদ-নদীর প্রায় সবগুলোতেই বিভিন্ন উৎসব-পার্বনকে কেন্দ্র করে নৌকা বাইচ হতো এবং এই নৌকা বাইচ বাঙালি লোকজ সংস্কৃতির একটি সৌন্দর্যময় ঐতিহ্যমণ্ডিত উপাদান। তাই আমরা কর্ণফুলীকে বাঁচিয়ে রেখে শুধু অর্থনীতির সমৃদ্ধি নয়, বাঙালির চিরায়ত লোকজ সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষা করারও স্বপ্ন দেখি। নাছির আরও বলেন, নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করার জন্য আইনের প্রয়োগ চাই। পাশাপাশি জনসচেতনতাও সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। যেসব কারণে কর্ণফুলী দখল ও দূষণ হচ্ছে সেগুলোকে চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয়, প্রতিষ্ঠানগত ও সামাজিকভাবে সমন্বিত উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কর্ণফুলী নদীকে ঘিরে যে আনন্দময় ও একটি আয় উপার্জনমুখী জীবনধারা দীর্ঘকাল ধরে বিবর্তিত হয়ে আসছে তা আজ অনেকাংশে তার ঐতিহ্য হারিয়েছে। কর্ণফুলীর সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতি প্রাণ প্রবাহের সম্পর্ক। এই সম্পর্ক মূলত অর্থনৈতিক এবং কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়।

নগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, নগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, তথ্য গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, ত্রাণ সমাজকল্যাণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ হোসেন।

উপস্থিত ছিলেন, কার্যনির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দীন খালেদ বাহার, হাজী বেলাল আহমেদ, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি ফেডারেশনের সভাপতি এস এম পেয়ার আলী, চট্টগ্রাম ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান, মাঝি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, জাফর আহমদ, সাবেক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, শৈবাল দাশ সুমন প্রমুখ।

কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড় ইছানগর থেকে নৌকা বাইচ শুরু হয়ে উত্তর তীরের অভয়মিত্র ঘাটে এসে শেষ হয়। এই প্রতিযোগীতায় ১০টি দল অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রথম হয়েছে শিকলবাহা ব্লক পাড়া শেখ আহমদ মাঝির দল, দ্বিতীয় হয়েছে চট্টগ্রাম ইছানগর বাংলা বাজার ঘাট সাম্পান মলিক সমিতি সভাপতি মো. লোকমানের দল, তৃতীয় হয়েছে মাদ্রাসা পাড়া ১ নম্বর গেইট চরপাথরঘাটার পক্ষে মো. তারেকের দল।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত