20195
Published on অক্টোবর 9, 2020সকল ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত সকল আসামি ও পৃষ্ঠপোষকদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা এবং নারীর প্রতি সহিংসতার স্থায়ী অবসানের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ।
আজ শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিকেল ৩ টায় ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। এসময় ধর্ষণবিরোধী স্লোগানে মুখরিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা।
দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিট ছাত্রলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে ধর্ষণের বিচারের দাবি তোলে ছাত্রলীগ।
সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগ জড়িত নয় দাবি করে নেতারা বলেন, আসল ঘটনা আড়াল করতেই বারবার ছাত্রলীগকে দায়ী করা হচ্ছে।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু আমরা কি দেখতে পাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সে মামলার আজকে ১৮ দিন চলতে যাচ্ছে। কই সেই ধর্ষণের মাস্টারমাইন্ডসহ সেই ধর্ষককে তো এখনো গ্রেফতার করা হয় নাই। তথাকথিত ছাত্র অধিকার পরিষদ বর্তমানে ধর্ষক পরিষদে পরিণত হয়েছে। সে পরিষদের নুর গংরা আমার বোনকে ধর্ষণ করে আবার লাইভ প্রোগ্রামে পতিতা বানায়। যেখানে পাবেন এই নুরু গংদের প্রতিহত করুন। আমাদের বোন ফাতেমার পাশে আমরা ছাত্রলীগ থাকব। দ্রুত তাদের (নুর গং) গ্রেফতার করে বিচার না করা পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ফাতেমার পাশে থাকবে।’
তিনি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হককে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ছাত্রলীগ কি জিনিস ইতিহাস জানে। যদি আপনাদের না জানা থাকে, আরেকবার জানার চেষ্টা করবেন। ছাত্রলীগ কখনও মৃত্যুকে ভয় পায় না। মৃত্যুকে উপেক্ষা করে নিজের বুক সামনে ঠেলে দিয়ে, রক্ত ঢেলে দেয়।’
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, আপনারা সবাই সজাগ থাকুন, পাহারা দিন। কোথাও কোনো ইভটিজিং ও ধর্ষণের ঘটনা যেন আর না ঘটে।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আমরা আবেদন করেছি যে, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধী যেই হোক না কেন তাদের গ্রেফতার করুন। প্রশাসন সবাইকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছে সে মামলার একজনও তো এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হতে দেখলাম না।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বোন একটি মামলা করেছে। যেখানে একটি সংগঠনের শীর্ষ নেতাকে আমরা জড়িত থাকতে দেখেছি। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, ধর্ষক যে-ই হোক, আপনারা তাকে গ্রেফতার করুন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার কেউ গ্রেফতার হয়নি। নুর-মামুন কি ছাত্রলীগ করে? সাভারের ঘটনার হত্যাকারীরা কি ছাত্রলীগ করে? ফেনীতে এক নারীকে বিবস্ত্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা কি ছাত্রলীগ করে? তাহলে কেন ছাত্রলীগের প্রতি আপনাদের টার্গেট?’
শাহবাগে আন্দোলনকারীরা আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ দিতে চায়। কেন সরকার নিয়ে আপনাদের কী সমস্যা? সবাইকেই তো গ্রেফতার করা হয়েছে।’
এছাড়া সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান রিদয় এবং দক্ষিণের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের হোসেন প্রমুখ।