1449
Published on সেপ্টেম্বর 11, 2020পশ্চিমের দেশ হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্তের ঢাকা সফরে দু’দেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। পরমাণু গবেষণা, চিকিৎসা বিদ্যা এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা- এই তিন বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে হাঙ্গেরি এবং আগামী জানুয়ারির মধ্যে ঢাকায় তাদের কনস্যুলেট অফিস চালু করবে। এসব বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুটি সমাঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্ত বৃহস্পতিবার একদিনের সফরে ঢাকায় এসেই প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। সেখানে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে বৈঠক করেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন পিটার সিজার্ত। এ সময় বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির মধ্যে দুটি সমাঝোতা স্মারক সই হয়।
ঢাকা ছাড়ার আগে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্ত গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ঢাকা সফরের সুযোগ পাওয়ায় সম্মানিত বোধ করছি। হাঙ্গেরি বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে চায়। বাংলাদেশের ফরেন একাডেমি খুব সমৃদ্ধ। দু’দেশের কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ বিষয়ে আমরা একটি সমাঝোতা স্মারক সই করেছি। আমরা দুই দেশের মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী।’
তিনি বলেন, ‘পরমাণু প্রযুক্তিবিষয়ে হাঙ্গেরির ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিময় করব। চিকিৎসা বিজ্ঞানেও আমাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে, এই বিষয়েও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আলাপ করেছি। এছাড়া পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়েও আমরা দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করব।’
পিটার সিজার্ত বলেন, ‘হাঙ্গেরির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার আগ্রহ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা আলাপ চালিয়ে যাব। বাংলাদেশ অর্থনীতিতে খুব ভালো করছে। এখানে অনেক ভোক্তা রয়েছে আর হাঙ্গেরির প্রযুক্তি, ইলেক্ট্রনিকসহ ব্যবসায় খাতে ভালো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক মানুষের নাগরিক অধিকার ভোগ করার আইনগত অধিকার রয়েছে। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় হাঙ্গেরির সমর্থন অব্যাহত থাকবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে হাঙ্গেরি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘এখন থেকে প্রতি বছর ৩০ জন শিক্ষার্থী হাঙ্গেরি যাবে, পরমাণুপ্রযুক্তি বিষয়ে পড়াশোনার জন্য। চিকিৎসা বিজ্ঞানে জ্ঞানলাভের জন্যও এখন থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা হাঙ্গেরি ভ্রমণের সুযোগ পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দু’দেশর মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশে কনস্যুলেট অফিস স্থাপন করবে হাঙ্গেরি। হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এবারের সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেল।’