তারুণ্যের সজীব ওয়াজেদ জয়

1185

Published on আগস্ট 14, 2020
  • Details Image

ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ:

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জোষ্ঠ সন্তান সজীব ওয়াজেদকে আমরা মূলত চিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কারণেই। বাংলাদেশকে একটি প্রযুক্তিগতভাবে আধুনিক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে অনেকটা নীরবেই কাজ করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ। কিন্তু তার আলাদা একটি পরিচয় আছে যা হয়তো অনেকেই জানেন না। বাংলাদেশের রাজনীতি ও নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সজীব ওয়াজেদ হাতে নিয়েছেন একাধিক উদ্যোগ। এছাড়াও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণদের প্রতিভা বিকাশে।

রাজনীতিবিমুখ তরুণদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন করতে ২০০৪ সালে গড়ে তুলেন সুচিন্তা বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠন। সুচিন্তা প্রায় দেড় দশক ধরে রাজনীতি, ইতিহাস, অসাম্প্রদায়িকতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তরুণদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন এবং নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় তরুণদের মতামত পৌঁছে দিতে ২০১৩ সালে সজীব ওয়াজেদ প্রতিষ্ঠা করেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) নামক গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। সিআরআই গঠনের জন্য সজীব ওয়াজেদ বেছে নেন উন্নত বিশ্বের ‘পলিটিক্যাল ফাউন্ডেশন’ মডেলটি।

জাতীয় উন্নয়ন, রাজনীতি ও ইতিহাস নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি এই সংগঠন থেকে নিয়মিত ‘লেটস টক ‘নামক একটি উন্মুক্ত আলোচনার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় যেখানে মন্ত্রী, সাংসদ-সহ বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের মানুষদের সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার তরুণদের খোলামেলা কথাবার্তা হয়। প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় রাজনৈতিক জবাবদিহিতার জায়গা। পাশাপাশি ‘পলিসি ক্যাফে’ নামক একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন নীতি, আইন, কৌশল ইত্যাদি নিয়ে নীতিনির্ধারকদের কাছে তরুণদের সুচিন্তিত মতামত সরাসরি পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়। তরুণদের কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘উন্নয়নের রাজনীতি’ পৌঁছে দিতে দেশের বিভিন্ন খাত নিয়ে সহজ ভাষায় এবং ইনফোগ্রাফিক্স-সম্পন্ন প্রকাশনাও নিয়মিত তৈরি করে যাচ্ছে সিআরআই। প্রতিটি প্রকাশনাই বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে সংগঠনটির ওয়েবসাইটে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নতুন আঙ্গিকে শিশু, কিশোর ও তরুণদের কাছে পৌঁছে দিতে সিআরআই এর ‘মুজিব’ গ্রাফিক নভেলটিও ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। রাজনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকদের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জনগণের মতামত তুলে ধরতে সজীব ওয়াজেদের তত্ত¡াবধানে নিয়মিতভাবে জনমত জরিপ করা হয়। এই উদ্যোগগুলো যে বাংলাদেশের রাজনীতিকে অধিকতর স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিতামলূক করছে, এই কথাটি বললে নিশ্চয়ই বাড়িয়ে বলা হবে না। বাংলাদেশের অধিকাংশ জনসংখ্যা তরুণ। এই তরুণদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোনো ধরনের সহায়তা ছাড়াই নিজ উদ্যোগে সমাজ পরিবর্তনের কাজে নিয়োজিত আছেন।

এই প্রতিশ্রুতিশীল তরুণদের মূল্যায়ন করতে এবং উৎসাহ দিতে ২০১৪ সালে সজীব ওয়াজেদ শুরু করেন ‘ইয়াং বাংলা’ নামক তরুণদের প্ল্যাটফর্মটি। ২০১৪ সাল থেকেই ইয়াং বাংলা নিয়মিতভাবে আয়োজন করে যাচ্ছে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড‘। জয় বাংলা অ্যাওয়ার্ডের প্রতিটি আসরেই ৩০ জন উদীয়মান তরুণকে সমাজ কল্যাণ, স্বেচ্ছাসেবী, নারীর ক্ষমতায়ন, উদ্যোক্তা সহ বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কৃত করা হয়। শুধু পুরস্কার দিয়েই দায়িত্ব শেষ হয় না, এই কথাটি মাথায় রেখেই সকল পুরস্কারপ্রাপ্ত তরুণদের ‘ইয়াং বাংলা’ নেটওয়ার্কের অংশও করে নেওয়া হয়। সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে তরুণদের সেতুবন্ধন করার মাধ্যমে তাদের ভালো কাজগুলোকে আরও প্রসারিত করার সুযোগ করে দেয় ইয়াং বাংলা।

প্রতি বছর তরুণদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্পৃহা জাগিয়ে তুলতে ইয়াং বাংলা আয়োজন করে ‘জয় বাংলা কনসার্ট’। ফেসবুকের মতোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো জনগণের সঙ্গে, বিশেষ করে তরুণদের সঙ্গে, যোগাযোগ স্থাপনের সবচেয়ে সহজ ও সুলভ মাধ্যম। ২০১৩ সালে নিজের ফেসবুক পাতা খুলে জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের রীতি সজীব ওয়াজেদই শুরু করেন বাংলাদেশের মূলধারার রাজনীতিবিদদের মধ্যে। তার দেখাদেখি অনেক রাজনীতিবিদই তারপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সরব হতে শুরু করেন। এরপর সিআরআইকে কাজে লাগিয়ে সংসদ ও রাজনীতিবিদদের একাধিক প্রশিক্ষণ কর্মশালারও ব্যবস্থা করেন যাতে তারা এই তাৎক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর সুবাদে জনগণের একদম কাছে পৌঁছে যেতে পারেন। অনেকেই জানেন না যে বাংলাদেশের প্রথম প্রজন্মের একজন অনলাইন ব্লগারও সজীব ওয়াজেদ। ২০০৫ সালে নিজের নামে ব্লগসাইট খুলে সেখানে নিয়মিত লেখালেখি করতেন সজীব ওয়াজেদ। উত্তর দিতেন পাঠকদের বিভিন্ন প্রশ্নের। তার এরকম একটি লেখাতেই প্রথম উঠে আসে সকল ভোটারদের জন্য একটি জাতীয় তথ্যভান্ডার বা ডাটাবেজ তৈরি করার কথা। বাংলাদেশের রাজনীতিকে আধুনিক করতে, বিশেষ করে তরুণ-বান্ধব করে তুলতে, নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সজীব ওয়াজেদ। আমার বিশ্বাস কাজের মাধ্যমেই তরুণদের সকল প্রত্যাশা পূরণে সফল হবেন সজীব ওয়াজেদ।

লেখক: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও রাজনৈতিক কর্মী

সৌজন্যেঃ www.amadershomoy.com 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত