সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ ৯৫,৫৭৪ কোটি টাকাঃ বরাদ্দ মোট বাজেটের ১৬.৮৩%

2089

Published on জুন 12, 2020
  • Details Image

আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য উত্থাপিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণও। প্রস্তাবনা অনুযায়ী, সামাজিক নিরাপত্তা বাবদ বাজেটে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের তুলনায় প্রায় ১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি। সেক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা বাবদ প্রস্তাবিত বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশে, যা একই সঙ্গে মোট জিডিপির ৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৮১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা।

জাতীয় সংসদে গতকাল ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ ছুটি ঘোষণা, লকডাউন, শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ মানুষের আয় কমে দারিদ্র্য নিরাপত্তায় আমাদের অর্জন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার চলতি অর্থবছরে দরিদ্র কর্মজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবে ৫০ লাখ জনকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

বয়স্ক ভাতা: করোনা মহামারীর কারণে সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১০০টি উপজেলায় বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী সব দরিদ্র প্রবীণ ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা হবে। এতে করে পাঁচ লাখ জন নতুন উপকারভোগী যোগ হবে এবং এ খাতে ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হবে।

বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা: করোনা মহামারীর কারণে সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১০০টি উপজেলায় বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী সব বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা ভাতার আওতায় আনা হবে। এতে করে ৩ লাখ ৫০ হাজার জন নতুন উপকারভোগী যোগ হবে এবং এ খাতে ২১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হবে।

অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা: সর্বশেষ প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপ অনুযায়ী ২ লাখ ৫৫ হাজার জন নতুন ভাতাভোগী যুক্ত করে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগীর সংখ্যা ১৮ লাখ জনে বৃদ্ধি করা হবে এবং এ বাবদ ২২৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হবে।

পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম: অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচণের কৌশল হিসেবে তত্কালীন ১৯টি থানায় ‘পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম শুরু করেন। এ কার্যক্রমের সফলতার কারণে বর্তমানে দেশের সব জেলায় প্রত্যেক উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এ কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। আশা করা যায়, এ প্রণোদনার মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন গতিসঞ্চার করে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। করোনাজনিত আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল করা এবং গ্রামে বসবাসরত দরিদ্র, দুস্থ ও অসহায় মানুষের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রমে জন্য ১০০ কোটি টাকা প্রণোদনা প্রদানের ঘোষণা করছি।

এছাড়াও দরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকাল ভাতা, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা, ভিজিডি কার্যক্রম, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভাতা, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ, ক্যান্সার, কিডনি ও লিভার সিরোসিস রোগীদের সহায়তা, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি ইত্যাদি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্র, ২০১৫ সালের আলোকে করোনা পরিস্থিতি হতে দরিদ্র অসহায় মানুষের অবস্থা উত্তরণের জন্য বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। দরিদ্র জনগণের অবস্থা উন্নয়নে আমরা সামাজিক নিরাপত্তা খাতে প্রতি বছর বরাদ্দ বৃদ্ধি করে চলছি। বর্তমানে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে এসেছি।


সৌজন্যেঃ বণিক বার্তা

 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত