981
Published on এপ্রিল 22, 2020করোনার এই দুর্যোগময় সময়ে মানবিক সহায়তা এবং ত্রাণের আওতার বাইরে কেউ নেই বলে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক, এমপি বলেছেন, সরকার সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে সাধ্যমত চেষ্টা করছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাই সহায়তা পাবেন। আপনাদেরকে ধৈর্য্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। এই সরকার জনবান্ধব ও গণমুখী । সরকার সবসময় আপনাদের পাশে আছে। কৃষিমন্ত্রী আজ বুধবার টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর পাইস্কা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণের সময় এ কথা বলেন। করোনা থেকে নিরাপদে থাকতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে মন্ত্রী ৩০০টি দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
কৃষিমন্ত্রী এইসময় ধনবাড়ি-মধুপুরের জনগণের উদ্দেশে বলেন, মহামারী করোনার কারণে সারা বিশ্বের মানুষ আজ আতঙ্কিত। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকল মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে আপনারা সাবধানে থাকবেন যাতে করোনাক্রান্ত না হন। পরে কৃষিমন্ত্রী ধনবাড়ী পৌরসভার মেয়র খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপনের উদ্যোগে কলেজ মাঠে আরো ৩০০টি দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এছাড়াও, বিকালে কৃষিমন্ত্রী টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় ২৫০০ দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে ত্রাণ বিতরণ করবেন।
পরে কৃষিমন্ত্রী ধনবাড়ী উপজেলা মিলনায়তনে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সাথে করোনা প্রতিরোধ, ত্রাণ বিতরণ এবং ধান কাটা বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সভায় কৃষিমন্ত্রী করোনা মোকাবিলায় সরকারের নির্দেশনাগুলোকে সঠিকভাবে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে সকলকে একসাথে নিষ্ঠার সাথে কাজ করা আহ্বান জানান। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকার ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে অনিয়মকে কোন রকম প্রশ্রয় দিচ্ছে না। ইতোমধ্যে ত্রাণ বিতরণে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই দু:সময়ে- মহাদুর্যোগে মানবিকতা ভুলে যারা ত্রাণ বিতরণে অনিয়মে জড়িত হবে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ হীরা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা সিদ্দিকা, সার্কেল এএসপি কামরান হোসেনসহ উপজেলা পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ধান কাটা বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ সময়টা বোরো ধান কাটার মৌসুম। সারাদেশে এবছর বোরো চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলো ০২ কোটি ০৪ লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। আমাদের সারা বছরের মোট চাল উৎপাদনের প্রায় ৫৫ ভাগের যোগান দেয় বোরো ধান। সেজন্য, শুধু হাওর নয়, সারা দেশের ফসল সুষ্ঠুভাবে ঘরে তোলা জরুরি। আর এটি করতে পারলে বাংলাদেশের ধান উৎপাদনে তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। একই সাথে, নিশ্চিত করবে খাদ্য নিরাপত্তা । কৃষি মন্ত্রণালয় এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন্ জেলায় ধান কাটতে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে সারাদেশে ১০০ কোটি টাকার মাধ্যমে প্রায় ৮০০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৪০০টি রিপারসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আরও ১০০ কোটি টাকা দিয়ে সমপরিমাণ কৃষি যন্ত্রপাতি অচিরেই কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম চলছে।