3544
Published on এপ্রিল 17, 2020চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকার একটি স্কুলের গেইটের কাছে উদ্দেশ্যহীনভাবে বসেছিলেন নাসিমা। ৯ বছর বয়সী একটি ছেলেকে নিয়ে বাসা-বাড়িতে কাজ করে নাসিমার জীবন চলে। করোনা আতঙ্কের কারণে এখন নাসিমার কাজ বন্ধ। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে মাস খানেক আগে বাসার মালিক বলে দিয়েছেন নাসিমা আপাতত যেন বাসায় না যায়। নাসিমার মত এমন অসংখ্য মানুষ হঠাৎ করেই কর্মহীন পড়েছে বর্তমান সময়ে।
বিদায়ের সময় যে ক’টি টাকা দিয়েছিলেন সেই টাকায় একসপ্তাহ চললো মা-ছেলে। কিন্তু গতকাল থেকে নাসিমার বাসায় কোনো খাবার নেই। ক্ষুধার জ্বালায় ছেলেটি সকাল থেকেই কাঁদছে।
চট্টগ্রাম নগরীতে এমন অসহায় মানুষদের একজন যুবক খাবারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে বলছেন, এগুলো রাখেন, আপনাদের জন্য এই খাবার শেখ হাসিনা পাঠিয়েছেন। শুধু নাসিমাই না, ওই যুবক এরকম অনেক কর্মহীন অসহায় মানুষকে তার সাথে থাকা জরুরী খাদ্য সামগ্রী দিয়ে বলছেন এগুলো রাখেন আপনার জন্য শেখ হাসিনা পাঠিয়েছেন।
নগরীর পলিটেকনিক্যাল এলাকায় এক যাত্রী নিয়ে রিকশায় প্যাডেল ঘোরাচ্ছেন এক বয়স্ক লোক। দৃশ্যটি দেখেই ওই যুবকটি গতিরোধ করেন রিকশার। বলেন, ’চাচা নিন, এখানে চাল, ডাল, তেল, সাবান সবই আছে। শেখ হাসিনা আপনার জন্য পাঠিয়েছেন।’
এই কথায় রিক্সাওয়ালা যতটা না অবাক, তার চেয়েও বেশি অবাক রিক্সাযাত্রী। কৌতূহলী রিক্সাযাত্রী যুবককে আর ছাড়েই না। ভাই, বলুন তো ঘটনা কী, আসলেই কি শেখ হাসিনা দিয়েছেন? হ্যাঁ, শেখ হাসিনাই দিয়েছেন।
পরে ওই যুবকের খোঁজ পাওয়া গেল। যুবকের নাম আরিফ, আবু মোহাম্মদ আরিফ। তার কাছ থেকে জানা গেল আসল ঘটনা।
আরিফ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি। তিনি বলেন,গাড়িতে কিছু খাবারসামগ্রী তুলে দিয়ে আমাকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পাঠিয়েছেন এই কথা বলে যেন ভাসমান মানুষদের কাছে গিয়ে বিলি করি। কোনো ছবি তোলা বা প্রচার করতেও এসময় আমাকে নিষেধ করা হয়েছে।
কে নিষেধ করেছেন, কে বা দিয়েছেন আপনাকে এই খাবার। আরিফের জবাব -মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার ছোটভাই ডা. বিদ্যুত বড়ুয়া।
ডা. বিদ্যুত বড়ুয়াকে ফোন করতেই জানা গেলো আসল ঘটনা। মূলত ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ঢাকা থেকে খাবারগুলো পাঠিয়ে কোনো জনসমাগম না ঘটিয়ে, নিজেকে জাহির না করে বিলি করতে বলেছেন এবং বিলির সময় যেন বলা হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই খাবারগুলো পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে বিষয়টি প্রচার না করতেও ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্পষ্ট বলে দিয়েছেন বলে জানান ডা. বিদ্যুত বড়ুয়া।