3280
Published on নভেম্বর 5, 2019গত এক দশকে বাংলাদেশ অবিশ্বাস্য উন্নতি করেছে উল্লেখ করে সফররত বিশ্বব্যাংক গ্রুপের নির্বাহী পরিচালকবৃন্দ বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে তারা সহায়তা অব্যাহত রাখবেন।
সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তারা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অবিশ্বাস্য উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছি। বাংলাদেশ সকল সামাজিক সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে।’
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকবৃন্দ সরকারের উন্নয়ন নীতিমালা এবং বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পসমূহ সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন।
প্রেস সচিব বলেন, তারা বেসরকারি খাতের বিকাশে প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে তারা বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় এবং সহায়তা করার ক্ষেত্রে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের উদারতা দেখে তারা অত্যন্ত আনন্দিত।
এ প্রসঙ্গে তারা শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন যে, রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখার জন্য তারা কক্সবাজার পরিদর্শন করেছেন।
তারা আরো বলেন, বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গাদের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতি হলো গ্রামীণ জনগোষ্ঠী যাতে উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করা।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, ক্ষমতায় আসার পর তাঁর সরকার খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা এবং যোগাযোগ ও জ্বালানি খাতে উন্নয়ন নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, ‘সেজন্য আমরা এ সকল খাত বেসরকারি খাতের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি।’
বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন বাস্তবসম্মত পদক্ষেপের কারণে দারিদ্র্যের হার স্বাধীনতা পরবর্তী ৮২ শতাংশ থেকে বর্তমানে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে।
সাধারণ মানুষের মুক্তিই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সারাজীবন একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার জন্য সংগ্রাম করেছেন।’
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, সরকার দেশের রেল, সড়ক, নৌ ও বিমান যোগাযোগ উন্নয়ন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার স্থানীয় বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য সারাদেশে একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্য হচ্ছে আরো শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
তিনি স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনার কথা সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার গ্রামীণ ও দুস্থ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি সম্প্রসারিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার যুব সমাজকে খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে দেশের সকল উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে, যাতে তারা সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও মাদক থেকে দূরে থাকে।
তিনি বলেন, সরকার দেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাঁচাতে জলবায়ু মোকাবেলা ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে এবং বৃক্ষরোপণের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রী মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমদ ও অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক অপর্ণা সুব্রামনি একই স্থানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
ভারতীয় নাগরিক অপর্ণা সুব্রামনি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, তিনি বাংলাদেশের কয়েকটি পল্লী এলাকা ও ডিজিটাল সেন্টার পরিদর্শন করেছেন এবং দেশে নারী ক্ষমতায়ন প্রত্যক্ষ করেছেন।
ব্যাংক সুদের হার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোকে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে।