3233
Published on সেপ্টেম্বর 11, 2019বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে বুধবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, আটটি ৩৩/১১ কেভি জিআইএস উপকেন্দ্র এবং ১০টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার অনুরোধ থাকবে যারা বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন তারা সাশ্রয়ী হোন, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ যেন নষ্ট না হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে বিলটাও কম আসবে, সেটা মাথায় রাখতে হবে। কাজেই প্রত্যেকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হবেন, সাশ্রয়ী হবেন।
“আমরা কিন্তু যত টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি তার চেয়ে অর্ধেকের কম দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যাচ্ছি। বিদ্যুতে এভাবে ভর্তুকি দেওয়া ঠিক নয়। তারপরও মানুষের কল্যাণে, মানুষের সুবিধার জন্য…আপনারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন সেই আশা করছি।”
সরকারে আসার পর বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আইন করার কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
“আমরা রাস্তাঘাট, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করি। সাথে সাথে বিদ্যুৎটা অত্যন্ত জরুরি। বিদ্যুৎ যখন গ্রামে-গঞ্জে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় তখন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটা গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দেওয়া আর বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন করা। আমরা কিন্তু সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “প্রতিটা উপজেলা যেন সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎ পায় সেজন্য আমরা ঘোষণা দিয়েছি, যেন মানুষের মধ্যে একটা উৎসাহ আসে। শতভাগ বিদ্যুৎ ধীরে ধীরে বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলা, উপজেলা থেকে ইউনিয়নে পৌঁছে যাবে, সেটা আমরা পৌঁছাতে পারব।”
দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে গ্যাস বিক্রির জন্য একসময় চাপ আসার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আগে গ্যাসের স্বল্পতা ছিল। গ্যাস বিক্রি করার জন্য ২০০১ এ আমাদের ওপর প্রচণ্ড চাপ ছিল। গ্যাস আমাদের। আমরাই ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে আন্তর্জাতিক টেন্ডার দেই। বিদেশিরা এসে গ্যাস উত্তোলন কাজ শুরু করে। সেই সময় চাপ আসল যে গ্যাস বিক্রি করতে হবে।
“দেশের মানুষের চাহিদা পূরণের পর অতিরিক্ত গ্যাস থাকলে সেটা বিক্রি করব- এই নীতি নিয়ে আমি ছিলাম। কিন্তু বিএনপি তখন এক বাক্যে রাজি হয়ে গেল তারা ক্ষমতায় আসলে গ্যাস বিক্রি করবে। যেহেতু আমি রাজি হইনি, তার খেসারত দিতে হয়েছে… ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি।”
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দেশ অন্ধকারে ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “২০০১ এ যারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের একটাই লক্ষ্য ছিল নিজেরা আর্থিকভাবে কিভাবে লাভবান হবে।নিজেদের অর্থ সম্পদের দিকেই তারা বেশি ব্যস্ত ছিল। সেই সাথে সাথে দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সেই দিকেই তাদের নজর ছিল। প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশকে পিছিয়ে রেখেছিল।”
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।