শিক্ষার মান রক্ষায় যত্রতত্র মেডিক্যাল কলেজের অনুমতি দেওয়া হবে নাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

3617

Published on এপ্রিল 17, 2019
  • Details Image

সরকার দেশের সব বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার মান রক্ষায় যতত্রতত্র মেডিকেল কলেজ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।

মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ ও জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধন এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সংগৃহীত সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ও যানবাহন বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘ দশ বছরে আমরা স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক উন্নতি করেছি। প্রথমবার সরকারে আসার পর আমরা ঢাকায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করেছিলাম। এরপর দ্বিতীয়বার থেকে শুরু করে আমরা চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী- তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। পর্যায়ক্রমিকভাবে প্রত্যেকটা বিভাগে একটা করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি।

“মেডিকেল কলেজ তৈরির ক্ষেত্রেও অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে যে, কত ছাত্র, কত শিক্ষক, শিক্ষার মানটা কতটুকু হবে। আমাদের অভ্যাস আছে একটা যখন শুরু হয় তখন সবাই সেটা করতে চায়। কোনোভাবেই যত্রতত্র করতে দেওয়া যাবে না। মানসম্পন্ন হতে হবে। শিক্ষাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “নার্সিংটা একসময় আমাদের চাকরির ক্ষেত্রে খুব নিম্ন পর্যায়ে ছিল। আমি তাকে উচ্চ পর্যায়ে তুলে দিই। একসময় ডিপ্লোমা নার্সিং ছিল। কেবলমাত্র ডিপ্লোমা নার্সিং ট্রেনিং করা হত।”

যেকোনো বিষয়ে পড়াশোনা করে নার্সিংয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

“আমাদের একটা সমস্যা রয়েছে… কেউ যদি নার্সিংয়ে আসতে চায় তাকে সায়েন্সের স্টুডেন্ট হতে হবে। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে আমি নির্দেশ দিয়েছি, এরকম কোনো বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত না।

“বরং নার্সিং পড়ার সময় সায়েন্সের যে সাবজেক্টটা যতটুকু প্রয়োজন সেটা নার্সিং শিক্ষার যে কারিকুলাম সেখানে সংযুক্ত করে দিতে হবে এবং যে কোনো সাবজেক্টে পড়ুক না কেন নার্সিংয়ে সবাই আসতে পারবে, সেই ব্যবস্থাটা নিতে হবে।”
সুষমখাদ্য যাতে মানুষ গ্রহণ করতে পারে সে ব্যাপারে আরও প্রচার দরকার বলে মত দেন তিনি।

চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাক্তার-নার্স নিয়োগ দিয়েছি এবং আরও যাতে উন্নতমানের হয় সেই ব্যবস্থা করছি। এখনও কিছু কিছু উপজেলায় ডাক্তারের অভাব আছে। সেই অভাবটা পূরণ করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

প্রধানমন্ত্রী ভেষজ চিকিৎসার বিষয়ে জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের দেশে আরেকটা বিষয় যেটা আমরা অবহেলা করতে পারি না। ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশ এখন উন্নত মানের ওষুধ করে, সেটা রপ্তানিও করে। কিন্তু পাশাপাশি আমাদের দেশে যেমন কিছু দেশজ ওষুধ আছে সেদিকেও কিন্তু যত্নবান হতে হবে।

“সারাবিশ্বে এখন ভেষজ জিনিসের ভীষণ চাহিদা আছে। সেইক্ষেত্রে আমাদের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা, ইউনানী চিকিৎসা, ভেষজ চিকিৎসা বা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা- এর ওপরও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এর ওপর গবেষণা প্রয়োজন। এই চিকিৎসা যেন মানুষ নিতে পারে আমরা সেদিকে দৃষ্টি দেব।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত