5636
Published on জুন 3, 2018কামাল চৌধুরীঃ
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬৩ সালে শান্তিনিকেতনের অবারিত প্রান্তরে ২০ বিঘা জমি ক্রয় করে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পুত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বয়স তখন মাত্র দুই বছর। কালের প্রবাহে শান্তিনিকেতন আর রবীন্দ্রনাথ ক্রমশ সমার্থক হয়ে গেছে। রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগে ও তাঁর শিল্পভাবনা, জ্ঞান ও সংস্কৃতিচর্চার ধারাবাহিকতায় এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিদ্যালয়, পরবর্তীকালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিধন্য শান্তিনিকেতন আজ বাঙালির অহঙ্কারের অংশ।
শান্তিনিকেতনের প্রাকৃতিক স্নিগ্ধতায় যুক্ত হয়েছে নান্দনিক এক বাংলাদেশ। শান্তিনিকেতনে পূর্বপলল্গীর একসময়ের খোলা মাঠে নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ ভবন। গত ২৫ মে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে উদ্বোধন করেছেন আমাদের বহু কাঙ্ক্ষিত এ ভবন। ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এর মাধ্যমে রবিতীর্থে ঘটে গেছে যুগান্তর- বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের নবতর মেলবন্ধন। পশ্চিমবঙ্গের পত্রিকার ভাষায় 'দুই বাংলার মিলনে ভারততীর্থ রবিনিকেতন'। এর ঐক্যসূত্র বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি বন্ধনহীন এক অসাধারণ গ্রন্থিতে বেঁধে দিয়েছেন চিরকালের বাংলা ও বাঙালিকে।
বিশ্বের বহু বিখ্যাতজন বিশ্বভারতীতে লেখাপড়া করেছেন। বাংলাদেশেও রয়েছেন অনেক প্রাক্তনী। কিন্তু আজ আমরা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও শান্তিনিকেতনের অংশ। এ এক ঐতিহাসিক ও গৌরবময় ঘটনা। বাংলাদেশের সম্মুখযাত্রায় এটি আরেকটি মাইলফলক। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণের পর শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এটি আরেকটি তাৎপর্যময় ঘটনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঐতিহাসিক ঘটনার মূল কুশীলব। ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে ভারত সফরকালে তিনি এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সে সময় তিনি শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন প্রতিষ্ঠার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। পরবর্তীকালে ২০১১ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর তাঁর আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফর করেন। সেখানেও এ বিষয়টি নিয়ে ঐকমত্য হয় এবং যৌথ প্রতিবেদনে শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়ের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। সেই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীকালে ধারণাপত্র তৈরি, পূর্বপলল্গীতে স্থান নির্বাচন, ভবনের ডিজাইন প্রস্তুত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভবন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ ভবনের নবনির্মিত মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানাসহ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী, আমন্ত্রিত অতিথি, বাংলাদেশ-ভারতের বিশিষ্টজন, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শান্তিনিকেতন শুধু ভারতের নয়, বাংলাদেশেরও। বিশ্বভারতীকে তিনি নিজেরও বিশ্ববিদ্যালয় বলে উলেল্গখ করেন। রবীন্দ্রনাথ আমাদের প্রাত্যহিকতার অংশ- এ বিষয়টি চমৎকারভাবে উঠে এসেছে তাঁর ভাষণে :
'রবীন্দ্রনাথ আমাদের অন্তরের কবি এ কারণে যে, তিনি মিশে আছেন আমাদের সবকিছুর সঙ্গে- আমরা আমাদের হাসি-কান্না, ব্যথা-বেদনা, আনন্দ যা কিছু ব্যক্ত করতে চাই, আমরা কিন্তু রবীন্দ্রনাথের রবির আলোতে উদ্ভাসিত হই, তাঁর কথা দিয়ে সেটা আমরা প্রকাশ করে থাকি।'
ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে রবীন্দ্রনাথের কবিতার একনিষ্ঠ পাঠক ছিলেন, সে বিষয়টিও উঠে আসে। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় একটি সুন্দর লেখা লিখেছেন। সেখানে তিনি তাঁর রবীন্দ্রভাবনা, ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক অনবদ্যভাবে তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধুর রবীন্দ্রপ্রীতি সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রবীন্দ্রনাথের দ্বারা এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে, 'আমার সোনার বাংলা' গানটি তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করে রেখেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের অনেক লেখা আব্বার মুখস্থ ছিল। তিনি বাড়িতে এবং স্টিমারে টুঙ্গিপাড়ায় আমাদের গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার সময় রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করতেন এবং নিয়মিত রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতেন।
আব্বার কয়েকটা প্রিয় পঙ্ক্তি ছিল :উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ও রে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।
প্রধানমন্ত্রী বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল অবিভাজ্য, তাঁরা বাঙালির অন্তরে আছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কবি নজরুলকে পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরদিন আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এ অনন্য সম্মান উৎসর্গ করেছেন বাংলাদেশের জনগণকে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশ ভবনকে ভারত-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে উলেল্গখ করেন। রবীন্দ্রনাথের মানবতাবাদী চেতনাকে তিনি তাঁদের প্রেরণা হিসেবে উলেল্গখ করেন। তিনি তাঁর ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন যে, তিনি (বঙ্গবন্ধু) বাংলাদেশের মতো ভারতেও সমান মর্যাদার ও সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত।
দুই বাংলার সম্পর্কের গভীরতার কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা থেকে বঙ্গবন্ধু, সবই আমাদের প্রাণের মাঝে আছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাঙালির প্রাণকেন্দ্র হবে এই বাংলাদেশ ভবন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবন নির্মাণের ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ ভবনের জমির পরিমাণ বর্তমানে ৮ বিঘা। তার ওপর এই চমৎকার ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে আধুনিক স্থাপত্য এবং শান্তিনিকেতন ও বাংলার প্রকৃতির ঐকতান ফুটে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন শান্তিনিকেতনের প্রকৃতি ও আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিফলন যেন এ ভবনে থাকে। সেভাবেই ভবনের নকশা করা হয়েছে। ভবনের সামনের অংশে আমাদের চৌচালা ঘরের আবহ তৈরি করা হয়েছে। ভেতরে ৪৫৩ আসনবিশিষ্ট একটি অডিটোরিয়াম আছে, যার ছাদ নৌকার ছইয়ের মতো। ভবনে আলো-বাতাস প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়েছে। সূর্যের আলো ও চাঁদের আলোয় স্নাত হবে ভবনের ভেতর-বাহির। বৃষ্টির শব্দ উপভোগ করতে পারবে কেউ ভেতরে বসে।
৪৪০০০ বর্গফুট আয়তনের এই দ্বিতল ভবন। প্রথম তলার আয়তন ২৮০০ বর্গফুট, দ্বিতীয় তলার আয়তন ১৬০০০ বর্গফুট, তার ভেতরে ১৩০০ বর্গফুটের একটি সুবিন্যস্ত লাইব্রেরি, ফ্যাকাল্টি রুম, ক্যাফে ও ৩০০০ বর্গফুটের জাদুঘর রয়েছে। সামনে আছে পোর্চ ও প্রশস্ত লন। বঙ্গবন্ধু ও কবিগুরুর ম্যুরাল নির্মাণের পরিকল্পনাও এখানে রয়েছে। সব মিলিয়ে শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন স্থাপত্য উৎকর্ষের এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে শান্তিনিকেতনের নৈসর্গিক পরিবেশে। এর পাশেই রয়েছে ইন্দিরা গান্ধী সেন্টার।
শিক্ষাকে রবীন্দ্রনাথ মানবজীবনের পূর্ণতা সাধনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি মনে করতেন, মানুষ বিশ্বপ্রকৃতি ও মানবসংসার এ দুয়ের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে। এ দুয়ের একত্র সমাবেশ করে শিক্ষায়তন গড়লে শিক্ষার পূর্ণতা ও মানবজীবনের সমগ্রতা হয়। সেই উপলব্ধি থেকে তিনি গড়ে তুলেছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ডিসেম্বরে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী উদ্বোধন করেন। রবীন্দ্রনাথ ১৯০১ সালে শান্তিনিকেতন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এটি এখন বিশ্বভারতীর স্কুল বিভাগের অংশ। ভারত স্বাধীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিশ্বভারতী ছিল কলেজ পর্যায়ের শিক্ষায়তন। ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতী সরকারিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়; এটি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। রেওয়াজ অনুযায়ী ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। শান্তিনিকেতন ছাড়াও শ্রীনিকেতনে বিশ্বভারতীর আরও দুটি ক্যাম্পাস রয়েছে। শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পশ্চিমে। ১৯২২ সালে রবীন্দ্রনাথ এখানে ১৫০ বিঘা জমি ক্রয় করেন। তৃতীয় ক্যাম্পাসটি প্রায় চার কিলোমিটার দূরে। বিশ্বভারতীর মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে রবীন্দ্রনাথ জ্ঞানচর্চার এ তীর্থক্ষেত্রে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাঁর আহ্বানে বহু বিশ্বব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ এখানে আসেন। ১৯২৭ সালে সিঙ্গাপুর ভ্রমণকালে তিনি চীনের অধ্যাপক তান উন শানকে (Tan Yun Shan) আমন্ত্রণ জানান। তান উন শান বিশ্বভারতীতে আসেন এবং ১৯৩৭ সালে 'চৈনিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি কেন্দ্র' বা চীনা ভবন স্থাপন করেন। এখানে চীনা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি শিক্ষা দেওয়া হয়। এখানে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি আছে। ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি বিভিন্ন সময়ে সরকারি সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে।
চীনা ভবনের মতো নিপ্পন ভবনে জাপানি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষা দেওয়া হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় এটি প্রতিষ্ঠিত। তবে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। জাপান সরকার থেকে এখানে কোনো সহায়তা প্রদান করা হয় না। তবে জাইকা, জাপান ফাউন্ডেশন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান বইপত্র দিয়ে, জাপানি ভলান্টিয়ার পাঠিয়ে সহায়তা করে।
কিন্তু বাংলাদেশ ভবন এ দুটি ভবন থেকে আলাদা- আকারে ও প্রকৃতিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- তিনজনই আশা প্রকাশ করেছেন যে, এ ভবন ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী ও বাঙালি সংস্কৃতিচর্চার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে। এখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে জ্ঞানচর্চার সুযোগও অবারিত। চীনা ও জাপানি ভাষার মতো এখানে বাংলা ভাষা শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ বিশ্বভারতীতে বাংলা ভাষা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে বহুকাল ধরে। ইতিমধ্যে এ ভবন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং বিশ্বভারতীর মধ্যে, যাতে বিভিন্ন বিষয়ে একাডেমিক রিসার্চ বাংলাদেশ বিষয়ে অধ্যয়ন, বিশেষ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা, রবীন্দ্রনাথ এবং বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব ইত্যাদি অধ্যয়নের সুযোগ থাকবে। এমফিল, পিএইচডির গবেষণার জন্য বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ১০টি ফেলোশিপ দেবে। এ ছাড়াও সেমিনার অনুষ্ঠান, প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ কারণে এ ভবনের কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা সমন্বিতভাবে গ্রহণ করতে হবে। সার্বিকভাবে এটি বিশ্বভারতীর মাধ্যমে পরিচালিত হলেও জ্ঞানচর্চা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পদ্ধতি কী হবে, সেটি সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করা প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিশ্বভারতীর মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও সমন্বয়ের উদ্যোগ এখনই গ্রহণ করতে হবে।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর 'রাখীসঙ্গীত'-এ প্রার্থনা করেছিলেন, 'বাঙালীর প্রাণ, বাঙালীর মন/বাঙালীর ঘরে যত ভাইবোন/এক হউক, এক হউক/ হে ভগবান'। আমরাও প্রত্যাশা করি, তাঁর প্রার্থনার অভিব্যক্তিরূপে প্রাণপ্রাচুর্য, জ্ঞানচর্চা ও সৃজন উৎসবের রবিকিরণে চিরকাল উদ্ভাসিত থাকবে শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন।
লেখকঃ কবি, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব
সৌজন্যেঃ সমকাল