8972
Published on এপ্রিল 24, 2018বিশিষ্ট রাজনীতিক ও পার্লামেন্টারিয়ান মো. আবদুল হামিদ মঙ্গলবার দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচন কমিশন মো. আবদুল হামিদকে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করার ৭৭ দিন পর তিনি ২৪ এপ্রিল শপথ গ্রহণ করেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বঙ্গভবনের দরবার হলে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
বঙ্গভবনে বর্ণিল সাজ-সজ্জার পাশাপাশি উৎসবমুখর পরিবেশে দরবার হলের মঞ্চে আবদুল হামিদ তার শপথে স্বাক্ষর করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মন্ত্রিসভার সদস্যগণসহ প্রায় এক হাজার বিশিষ্ট অতিথি এই শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এসময় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রপতিগণ, সংসদ সদস্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, কূটনীতিক, সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকগণ, রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।
রাষ্ট্রপতি আইন ১৯৯১ এর ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার নূরুল হুদা রাষ্ট্রপতি পদে অন্যকোন প্রার্থী না পাওয়ায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি মো. আবদুল হামিদকে বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন।
১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে মাত্র একবার সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়। এর পর থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হচ্ছেন।
জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার আব্দুল হামিদ ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একমাত্র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। দলটি ৩১ জানুয়ারি তাকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়।
চীফ হুইপ আসম ফিরোজের নেতৃতে একটি প্রতিনিধি দল ২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন থেকে আব্দুল হামিদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে। ৫ ফেব্রুয়ারি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের অপর একটি প্রতিনিধি দল তা জমা দেয়।
গত ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হয়।২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন।
সাংবিধানিক নিয়মের ধারাবাহিকতায় ১৪ মার্চ, ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুর গমন করার পর তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তার মৃত্যুর পর, আব্দুল হামিদ ২০ মার্চ ২০১৩ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন।
আওয়ামী রাজনীতিতে দীর্ঘকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগী আব্দুল হামিদ দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করছেন।
বঙ্গভবনের একজন মুখপাত্র জানান, স্বাধীনতার পর আব্দুল হামিদ সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর থেকে ১৬ ব্যক্তি ১৯ মেয়াদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আব্দুল হামিদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকারী ১৭তম ব্যক্তি।
তার পিতা প্রয়াত হাজি মোহাম্মাদ তায়েবুদ্দিন ও মাতা তমিজা খাতুন। তিনি ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।