2080
Published on মার্চ 19, 2018বিএনপিকে অশোভন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য পরিহার করে গঠনমূলক সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
আজ সোমবার বেলা ১১ টায় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য বিকৃতি করে বিএনপির নেতাদের সাম্প্রতিক মিথ্যাচারের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আবারও জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে। আওয়ামী লীগ আবারও জয় লাভ করবে। তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় পাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এবং এই প্রত্যয় ব্যক্ত করাটাই স্বাভাবিক। কারণ গত ৯ বছরের বেশি সময় ধরে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে। দেশের মানুষের মধ্যে শান্তি স্থিতি বিরাজ করছে। দেশের মানুষ আজকে সুখি। আমরা একসময় ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্যমুক্ত বাংলাদেশের কথা বলতাম। এখন আর ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণের কথা বলার প্রয়োজন নেই। কারণ ক্ষুধাকে আমরা নির্মুল করেছি বাংলাদেশ থেকে। সে কারণেই আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় নিয়ে আওয়ামী লীগ আবারও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবে; জনগণ আমাদের পক্ষে রায় দিবে সেই প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা আবার জয় লাভ করবো আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সেই কথাটিই বলতে চেয়েছেন। অথচ বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ ও খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই বক্তব্যকে বিকৃত করে নানা ধরনের বক্তব্য রেখেছেন।
বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ইদানিং তিনি আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে যে সমস্ত কথা-বার্তা বলছেন এতে আমার সন্দেহ হয় তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কীনা। তিনি দীর্ঘদিন পরিবার ছেড়ে পার্টি অফিসে থাকায় তার মানসিক সুস্থ্যতা আছে কিনা তা বিএনপি নেতাদের খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা ২০০৮-এর নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকী নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন আওয়ামী লীগ ৩০টি সিটও পাবে না। আল্লাহ্র কী বিধান নির্বাচনে বিএনপি ২৯টি সিট পেয়েছিল। পরে ২টি সিট যুক্ত করে ৩০টি পূর্ণ করেছিল। আমরা চাই না বিএনপির মুখে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে যে বক্তব্য আগামী নির্বাচনে তা বিএনপির ক্ষেত্রে ঘটুক। আমরা বিএনপি নেতৃবৃন্দকে বলবো- আপনারা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
দেশ আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা এখন স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। অথচ বিএনপি বলছে, বাংলাদেশ অন্ধকার টানেলে নিমজ্জিত। তাদের এমন কথাতেই প্রমাণিত হয়, তারা যে সমস্ত বক্তব্য রাখেন তা রাজনৈতিক বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছাড়া কিছুই না।
তিনি বিএনপি নেতৃবৃন্দকে প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলাদেশ যদি অন্ধকার টানেলের মধ্যেই নিমজ্জিত হয়, তাহলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে কীভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার চিঠি হস্তান্তর করলো। বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকে একটি স্বল্পোন্নত দেশ ছিল। যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন দেশের স্বাধীনতার দশ-পনের বছরের মাথায় বাংলাদেশ হতো উন্নত দেশ। পৃথিবীর মানুষ আরও তিন দশক আগেই বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার গল্প শুনতো।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে সল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়া জাতির জীবনে একটি অসামান্য বড় অর্জন। অথচ জাতির এই অর্জনে বিএনপি অভিনন্দন জানাতে ব্যার্থ্য হয়েছে। এটি তাদের রাজনৈতিক হীনমন্যতার পরিচয় ছাড়া কিছুই নয়। তাদের সমস্ত রাজনীতি দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া, দুর্নীতিবাজ বেগম খালেদা জিয়া ও তার পুত্রকে রক্ষা করার জন্য আবর্তিত হচ্ছে। এ ধারা থেকে তারা বেরিয়ে না আসলে বিএনপির রাজনীতি যেভাবে চোরাবালিতে আটকে আছে তা থেকে ভবিষ্যতে আর বেরিয়ে আসতে পারবে না।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, বিএনপি জনগণের সাথে যে আচরণ করেছে। জনগণের প্রতি যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে। মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তার জন্য আপনারা জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আপনারা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া এবং দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করার রাজনীতি থেকে সরে আসুন।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামছুনাহার চাপা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
তারিখ : ১৯ মার্চ ২০১৮
প্রেস বিজ্ঞপ্তি