বিএনপি জামাত এখন ঘৃণার আগুনে পুড়ে মরছে, তাদের পরাজয় হবেইঃ ওবায়দুল কাদের এমপি

4418

Published on জানুয়ারি 7, 2018
  • Details Image

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, যারা দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, তারা এখন ঘৃণার আগুনে পুড়ে মরছে। বিএনপি-জামাত দেশে মানবিকতাকে অপমান করেছে হিংস্র দানবতার মাধ্যমে। তাদের পরাজয় হবেই।

আজ রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস নৈরাজ্যের খণ্ডচিত্র প্রদশর্নী ও আলোচনা সভা’য় এসব কথা বলেন তিনি। আলোচনা সভায় বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মাইশার মা ও নুরুজ্জামানের স্ত্রী মাফরুহা বেগম, ট্রাক ড্রাইভার পটল মিয়া, পুলিশ কনেস্টেবল মোর্শেদ আলম, আলু ব্যবসায়ী রেজাউল করিম, সেলসম্যান মোশাররফের স্ত্রী লাভলী আক্তার তাদের কষ্ট ও যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে নগদ অর্থ প্রদান করেন। সেই সাথে তাদের সার্বিক সহায়তারও আশ্বাস দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামাত দেশে মানবিকতাকে অপমান করেছে হিংস্র দানবতার মাধ্যমে। বিএনপি-জামাতের বর্বরতাকে তুলে ধরে তাদের মুখোশ উম্মোচন করতে হবে। যারা দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে তারা কোন মুখে দেশের মানুষের কাছে ভোট চায়। ২০১৮ সাল সাম্প্রদায়িকতার পরাজয়ের বছর। তাদের পরাজয় হবেই। বিএনপি-জামাতসহ সকল সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখতে হবে। আবারও তাদের পরাজিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

পাকিস্তানের দোসরা এখনও বাংলার মাটিতে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা পাকিস্তানি কায়দায় জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মা। তারা এখন রক্তের হোলিখেলা খেলছে। এরাই আবার গুম-খুনের কথা বলে। গুমের নাটক যারা সাজায় তারাই গুমের অভিযোগ দিতে দ্বিধা করে না। দেশে হঠাৎ হঠাৎ লাশ পরে থাকে। যারা ৯ বছর আন্দোলনে ব্যর্র্থ হয়েছে, তারাই দেশে গুমের ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাদের একজন সুইডেনে বসে কিলিং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছে। তার নাম নাহিদ। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও খুনের ঘটনা দেখছি। অনেকেই গুম হয়ে ফিরে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই এলাকার মাহফুজ বাবু ফিরে আসেনি।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা ভিক্টিম তাদের মুখে যে বর্ণনা শুনলাম, তারপর বক্তব্য দেবার আর কিছু থাকে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা আপনাদের পাশে আছেন, থাকবেন। শেখ হাসিনা বিপন্ন মানবতার বাতিঘর।

সভাপতির বক্তব্যে এইচ টি ইমাম বলেন, বিএনপি-জামাতের হত্যা, আগুন সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্যের কথা শুধু ঘরের মধ্যে বললেই হবে না; এর ব্যাপক প্রচার দরকার। প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করে সুন্দর ছক ব্যবহার করে জেলা, উপজেলা ও তৃণমূল পর্যায়েই প্রচার করতে হবে।

তিনি বলেন, যারা আগামীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে এখন থেকে বিএনপি-জামাতের অপকর্ম প্রচার, প্রচারণা শুরু করতে পারেন। এতে আপনাদের মনোবল প্রমাণ হবে। আপনারা আমাদের কাছ থেকে ভিডিও সংগ্রহ করে নিজ নিজ এলাকায় দেখান। এ প্রচার নিয়মিত দেখানো হলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে যে বিজয় হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি এবারও হবে, এবার আরও বড় আকারে বিজয় হবে।

এইচটি ইমাম বলেন, আমাদের হাতে সময় খুব কম, নির্বাচনের আর বেশি দেরি নাই। দেখতে দেখতে কয়টা মাস পার হয়ে যাবে। একবার যখন নির্বাচনের জোরালো প্রস্তুতি শুরু হবে, তখন সবাই এ প্রচারের কথা ভুলেও যেতে পারে। তাই এখন থেকে জনমত যদি আমাদের পক্ষে আনতে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন ও বিএনপি-জামাতের আগুন সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরলে নির্বাচনের বিজয় আমাদের জন্য সহজ হবে।

বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার সেলসম্যান মোশাররফের স্ত্রী লাভলী আক্তার বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া পেট্রোল বোমার আঘাতে আমার স্বামীর মুখমন্ডল পুড়ে যায়, তখন ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এরপর আমার স্বামীর চাকুরিও চলে যায়। আমরা দুই ছেলে ও মেয়ে নিয়ে আর্থিক অস্বচ্ছলতায় পড়ে যায়। তিনি এখন মালয়েশিয়ায় আছেন কিন্তু সেখানেও তিনি নিয়মিত কাজ করতে পারেন না। একদিন কাজ করলেই তাঁর হাতের যন্ত্রণা বাড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের যে অনুদান দিয়েছেন তা নিয়ে আমরা কোনরকম দিন কাটাচ্ছি।

আলু ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বলেন, সরকার আমাদের দিকে না তাকালে আমরা কেউ বাঁচতাম না। বিএনপি-জামাতের আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারার নাম কী রাজনীতি? আমিতো অসহায় মানুষ, আমিতো কোন রাজনীতি করি নাই, কোন মিছিল, মিটিং-এ যায় নাই। ছোট ব্যবসায়ী। কী আমার অপরাধ ছিল? আমি দেশের প্রতিটা মানুষের কাছে আমি বিচার চাই, এর বিচার আপনারাই করবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে না দাঁড়ালে আমাদের পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতাম। আমরা বাঁচতাম না। আমার চিকিৎসা হতো না।

প্রচার ও প্রকশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঞ্চলনায় এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনিবার্হী সংসদের সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামাতের অগ্নি সন্ত্রস ও নৈরাজ্যের ভিডিও এবং স্থিরচিত্র প্রর্দশন করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

তারিখ: ৭ জানুয়ারি ২০১৮

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত