২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি, সামরিক বাহিনীর অত্যাচারের প্রতিবাদ প্রতিফলিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে। বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠন করে। এই পাঁচ বছরে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে সরকার আপ্রান চেষ্টা করেছে এবং সফলতা লাভ করেছে। বিরোধীদলের ধ্বংসের রাজনীতি উপেক্ষা করে জনগন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের তথ্য সকলের কাছে পৌঁছে দিতে আমাদের এই প্রয়াস। আজ আমরা সামাজিক নিরাপত্তা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ খাতে সরকারের উন্নয়নের উপর আলোকপাত করেছি।
সামাজিক নিরাপত্তাঃ
- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের জনগনের দুর্দশা লাঘবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচী চালু করেন। তিনিই প্রথম রেশন, খোলাবাজারে ভোগ্যপণ্য বিক্রি ও রিলিফ বিতরণ কর্মসূচী শুরু করেন।
- সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে ব্যয় প্রতিবছর বৃদ্ধি। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১৬ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা থেকে বর্তমান ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ব্যয় লক্ষ্যমাত্রা ২২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকায় উন্নীত।
- সামাজিক সুরক্ষামূলক কর্মসূচীর আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ও দুস্থ ভাতা, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের জন্য ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী, ভর্তুকি মূল্য খোলা বাজারে খাদ্য পণ্য বিক্রি, ভিজিডি, বিজিএফ, টেস্ট রিলিফ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় খাদ্য সহায়তা, কর্মসংস্থান এর সুযোগ সৃষ্টি ইত্যাদি কর্মসূচী বাস্তবায়িত।
- বয়স্ক ভাতা ভোগীর সংখ্যা ২০ লক্ষ থেকে ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজারে উন্নীত। বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্ত দুস্থ মহিলা ভাতা ভোগীর সংখ্যা ৯ লক্ষ ২০ হাজারে উন্নীত। অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ ৮৬ হাজারে উন্নীত।
- দরিদ্র গর্ভবতী মা, কর্মজীবী ল্যাক্টেটিং মাদার এবং কৃষিকাজে নিয়োজিত প্রান্তিক নারী কর্মীদের জন্য ভাতা প্রদান।
- ৫০ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার কে পুনর্বাসন এবং আইলা ও সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার উন্নয়নের লক্ষে আশ্রয়ণ ২ প্রকল্প গ্রহণ।
- ঢাকায় একটি অটিজম রিসোর্স সেন্টার ও একটি অবৈতনিক অটিস্টিক স্কুল চালু।
- বিসিএস ক্যাডার সহ অন্যান্য সরকারী চাকুরীতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ পদে এতিম ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ।
- একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৯২৩ টি ইউনিয়নের ১০ লক্ষ ৩৮ হাজার পরিবার কে ১৭ হাজার ৩০০ গ্রাম সংরক্ষণের মাধ্যমে খামারিতে উন্নীতকরন।
ডিজিটাল বাংলাদেশঃ
- বিশ্বায়নের সকল সুবিধার লক্ষে তথ্য প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত। ২০২১ সালের অনেক আগেই “ডিজিটাল বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা সৃষ্টি।
- দেশের ৪ হাজার ৫১৬ টি ইউনিয়নে তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালু। এসব তথ্য কেন্দ্র থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সরকারী ফরম, নোটিশ, পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত তথ্য, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন সেবা বিষয়ক তথ্য, চাকুরীর খবর, নাগরিকত্ব সনদপত্র, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, বিদেশে চাকুরী প্রাপ্তির লক্ষ্যে রেজিস্ট্রেশন সহ ২২০ টি সেবা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি।
- মোবাইল ব্যাংকিং, জীবন বীমা, মাটি পরীক্ষা ও সারের সুপারিশ, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এবং জমি পরচা সহ অন্যান্য সেবা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি।
- প্রায় ৪ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন।
- উপজেলা ও জেলা হাসপাতাল গুলোতে মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা চালু। টেলি মেডিসিন সিস্টেম চালু।
- মোবাইল টেলিফোন সিমের সংখ্যা ১০ কোটিতে উন্নীত। থ্রি-জি প্রযুক্তি চালু। মোবাইল ফোনেই ভিডিও কল করা যাবে, টি ভি দেখা যাবে। ইন্টারনেট এর গতি বাড়বে, টেলি কনফারেন্স করা যাবে।
- ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা সাড়ে ৩ কোটিতে উন্নীত।
- ৫৮ টি জেলার ১৭৮ টি উপজেলা ও ৪২ টি গ্রোথ সেন্টার এ ডিজিটাল টেলিফোন প্রদান।
- ৩ টি পার্বত্য জেলার ২০ টি উপজেলায় ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ স্থাপন।
- বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, আইসিটি ফেলোশিপ ও অনুদান প্রদান।