2590
Published on নভেম্বর 4, 2013বাংলাদেশের মানুষকে তথ্যপ্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত করতে এবং এর মাধ্যমে মানুষের কার্যক্ষমতা বাড়াতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ২০১৩ সালে এসে আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি দেশ আজ আধুনিকায়নের পথে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের পথে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ অর্জন থ্রিজি সেবার সুচনা। গত ৯ই সেপ্টেম্বর থেকে এই সেবা দেওয়া শুরু হয়। এখন পর্যন্ত তিনটি জেলায় এই সেবা পাওয়া গেলেও অদূর ভবিষ্যতে সকল জেলায় এই সেবা পাওয়া যাবে। আগস্ট ২০১৩ তে দেশে মোবাইল ফোন সেবা ব্যবহারকারীর পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১০ কোটি ৯৩ লক্ষ ৪৯ হাজার। সেপ্টেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ৬ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটের আওতায় এসেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তি পৌঁছে দিতে ৪৫০১টি ইউনিয়ন পরিষদে ই-তথ্যসেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট খোলা ছাড়াই সর্বস্তরের মানুষ ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছে।
স্বাস্থ্যখাতে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির জন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সাউথ-সাউথ পুরস্কারে ভুষিত করেছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি প্রক্রিয়াতেও লেগেছে প্রযুক্তির হাওয়া। বর্তমানে প্রায় সকল সরকারী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মোবাইলের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাচ্ছে। এসএসসি, এইচএসসি, বিসিএস ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফলও এখন মোবাইলেই পাওয়া যাচ্ছে। মোবাইলের মাধ্যমে এখন পুলিশের কাছে অভিযোগ দাখিল করা যাচ্ছে। ডাক বিভাগে ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস চালু হয়েছে। ফলে মানুষ এক মিনিটেরও কম সময়ে বিশ্বস্ত উপায়ে টাকা পাঠাতে পারছে। আয়কর প্রদানকারীদের সুবিধার্থে ই-টিআইএন চালু করা হয়েছে যাতে অনলাইনে আয়কর প্রদান করা যায়। কম্পিউটার ব্যবহার সহজলভ্য করতে বাজারে আনা হয়েছে স্বল্প মুল্যের দোয়েল ল্যাপটপ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে মাধ্যমিক পর্যায়ে আইটি শিক্ষা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। ৬৪ জেলার ১৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২৩০ জন শিক্ষককে আইসিটি মাস্টার ট্রেইনার ও ৩২ হাজার ছাত্রকে আইসিটি প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির সুস্থ বিকাশে আইসিটি আইন ও আইসিটি নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি সেবা প্রদান ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ২৩১ একর জমিতে একটি হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে আরেকটি জাতীয় ডাটা সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। প্রাথমিক তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান বিকাশের জন্য উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আইসিটি প্রশিক্ষণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে প্রতিশ্রুতি সরকার দিয়েছে তা বাস্তবায়নের পথে সরকার অনেকদুর এগিয়েছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে অদূর ভবিষ্যতেই বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সফলতার স্বাক্ষর রাখবে এবং উন্নত দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় ঈর্ষণীয় অগ্রগতি লাভ করবে এটাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিশ্বাস এবং এই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাবো বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।