377
Published on আগস্ট 19, 2017১৯৮৬ সালের ওই সময় তিনি একটি কিন্ডার গার্টেনের ছাত্র ছিলেন।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে ছাত্রদের একটি গ্রুপ ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু মার্ডার কেস : জার্নি, একম্প্লিশমেন্টস অ্যান্ড রিমেইনিং চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক এক সেমিনারে এক প্রশ্নের জবাবে রাদওয়ান সিদ্দিক বলেন, ‘আমি ইনডেমনিটি আইনের কথা শুনে খুব আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম। কীভাবে এমন একটি আইন হতে পারে?’
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এই সেমিনারের আয়োজন করে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে কিছু সংখ্যক বিপথগামী সেনা সদস্য পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ স্বাধীনতার স্থপতিকে হত্যা করে।
এই নৃশংস হত্যাকান্ডের পর বিচারের হাত থেকে রক্ষার জন্য তৎকালীন খন্দকার মোশতাক আহমেদের সরকার ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এই কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। পরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে তৎকালীন বিএনপি সরকার ১৯৭৯ সালে সংসদে এই অর্ডিন্যান্স অনুমোদন করে।
১৯৭৭ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জড়িত ১২ জন সেনা কর্মকর্তাকে বিদেশে বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৮৬ সালে আমরা যখন ঢাকায় আসি তখন বনানীর ওই কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি হই। কিন্তু পরে আমি ওই স্কুল পরিবর্তন করি।’
রাদওয়ান বলেন, ‘তখন কেন আমার ওই স্কুল পরিবর্তন করা হলো তা মায়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। মা উত্তরে বলেছিলেন, ওই স্কুলে খুনীদের ছেলেরা রয়েছে।’ আমি তখন জিজ্ঞাসা করি, খুনীরা কিভাবে এখনো রয়েছে? তখন আমি ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স সম্পর্কে জানতে পারি।’
তার বয়সী ছেলেমেয়েরা তখন বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কিছুই জানতো না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবার আমাদের কাছে কখনো ইতিহাস গোপন করেনি। তাই আমাদেরকে ওই বর্বরতা সম্পর্কে জানানো হতো।’
তিনি এমনকি নিরাপত্তার কারণে তার স্কুলে তার নানা সম্পর্কে কোন কিছুই বলতেন না।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চিফ প্রসিকিউটর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এতে সঞ্চালক ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।
আলোচনার প্যানেলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি, ঢাবির সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন ও দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়।
সিআরআই ট্রাস্টি ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাশুরা হোসেন ও জাদুঘরের কিউরেটর ও সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খানও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।