532
Published on জানুয়ারি 1, 2017রোববার ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেছেন, “কয়েকটি দেশ ঘুরে... কোন দেশ জিএসপি দিল না, তাদের কাছে ধর্ণা না দিয়ে, আপনি খুঁজে বের করুন অন্য জায়গা। অন্য মার্কেট খোঁজেন।”
ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দিয়ে তিনি বলেন, “ওরাই আপনার পেছনে দৌড়াবে। কারণ বাংলাদেশ যত পণ্য, যত দ্রুত সরবরাহ করতে পারবে, পৃথিবীর কোনো দেশ তা পারবে না।”
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ এতো যোগ্য। তারা মেধাবী। একটু সুযোগ সৃষ্টি করলে যে কোনো কিছু তারা করতে পারে। সেই সক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের আছে। তাদের শুধু পথ দেখাতে হবে।”
পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করছি। গতানুগতিককিছু পণ্যের ওপর নির্ভর করে না থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যর বহুমুখীকরণ করতে হবে। সে অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি করতে হবে।”
আর ব্যবসায়ীদেরই নতুন বাজার খুঁজে বের করার জন্য উদ্যোগী হতে হবে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “উত্পাদিত পণ্যের যাতে একটা স্ট্যান্ডার্ড থাকে, বাজারজাত করার মতো উপযুক্ত হয়, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। পণ্য উত্পাদনে মান নিশ্চিত করতে হবে।”
এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ করেন। স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ তিন ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়।
এবার সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাতীয় রপ্তানি ট্রফিতে স্বর্ণপদক পেয়েছে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড।
নির্ধারিত ৩২টি পণ্য ও সেবা ক্যাটাগরির ১৯২টি আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯টি স্বর্ণ, ২২টি রৌপ্য এবং ১৫টি ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।
তৈরি পোশাকে একেএম নিটওয়্যার লিমিটেড, জিএমএস কম্পোজিট নিটিং ইন্ডাট্রিজ, সকল ধরনের সুতায় কামালইয়ার্ন, টেক্সটাইল ফেব্রিক্স প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, হোম ও স্পেশালাইজড টেক্সটাইলে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স, টেরিটাওয়েলে নোমান টেরিটাওয়েল মিলস, হিমায়িত খাদ্যে অ্যাপেক্স ফুড্স, কাঁচা পাটে পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ, পাটজাত দ্রব্যে আকিজ জুট মিল্স, চামড়ায় অ্যাপেক্স ট্যানারি, চামড়াজাত পণ্যে পিকার্ড বাংলাদেশ, ফুটওয়ারে ফুটবেড ফুটওয়্যার, কৃষিজ পণ্য মনসুর জেনারেল ফিডিং স্বর্ণপদক পেয়েছে।
অ্যাগ্রো প্রোসেসিংয়ে প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেড, ফুল-ফলিয়েজে মের্সাস রাজধানী এন্টারপ্রাইজ, হস্তশিল্প পণ্যে কারুপণ্য রংপুর, প্লাস্টিক পণ্যে বেঙ্গল প্লাস্টিক, সিরামিক সামগ্রীতে ফার সিরামিক্স, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যে বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ, অন্যান্য শিল্পজাত পণ্যে মেরিন সেইফটি সিস্টেম, ফার্মাসিউটিক্যালসে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল্স, কম্পিউটার ও সফটওয়্যারে সার্ভিস ইঞ্জিন, ইপিজেডভুক্ত শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন তৈরি পোশাক খাতে ইউনির্ভাসেল জিন্স, ইপিজেডভুক্ত শতভাগ বাংলাদেশ মালিকানাধীন অন্যান্য পণ্য ও সেবা খাতে শাশা ডেনিমস, প্যাকেজিং ও এক্সেসরিজে মনট্রিম্স, অন্যান্য প্রাথমিক পণ্যে গাজী এন্টারপ্রাইজ, অন্যান্য সেবা খাতে মীর টেলিকম, নারী উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে আর আর ট্রেড সিন্ডিকেট স্বর্ণ পদক পেয়েছে।
রৌপ্য পদক পেয়েছে অ্যাপারেল গ্যালারি, স্কয়ার ফ্যাশনস, বাদশা টেক্সটাইল্স, এনভয় টেক্সটাইল্স, ইউনিলায়েন্স টেক্সটাইল্স, হোসেন ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং মিল্স, সিমার্ক (বিডি), জনতা জুট মিল্স, এসএএফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ, বে ফুটওয়্যার, এগ্রিকনসার্ন, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, মের্সাস ক্যাপিটাল এন্টারপ্রাইজ, বিডি ক্রিয়েশন, বেঙ্গল প্লাস্টিক্স, প্রতীক সিরামিকস, বিএসআরএম স্টিলস, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল্স, জিন্স ২০০০, মেসার্স ইউনিগ্লোরি পেপার অ্যান্ড প্যাকেজিং ও ফার্ম ফ্রেশ এন্টারপ্রাইজ।
এছাড়া ইন্টারফ্যাব শার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং, ফকির নিটওয়্যার্স, মোশারফ কম্পোজিট টেক্সটাইল মিল্স, নোমান ইউভিং মিল্স, জালালাবাদ ফ্রোজেন ফুডস, করিম জুট স্পিনার্স, আকিজ ফুটওয়্যার, হেরিটেজ এন্টারপ্রাইজ, প্রাণ ফুডস, মেসার্স হেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্স, ডিউরেবল প্লাস্টিক্স, মুন্নু সিরামিক, এমআই সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল ও প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেড ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে সম্মেলন কেন্দ্রের সঙ্গে বাণিজ্য মেলার মাঠে কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদের মধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান মাফরূহা সুলতানা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্যসহ দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।