303
Published on ডিসেম্বর 14, 2016বুধবার বুদ্ধিজীবী দিবসের সকালে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী কাদের এ বিষয়ে সাংবাদিদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, “যারা সেরা সন্তানদের হত্যা করেছে, তাদের মধ্যে যারা শীর্ষস্থানীয়, তাদের বিচারকাজ শুধু সম্পন্নই হয় নাই, তাদের এক্সিকিউটও করা হয়েছে। বাইরে যারা আছে তাদেরও দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারের সক্রিয় প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।”
মঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানকে ফিরিয়ে আনতে সরকার ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা’ করে যাচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সময়মত এ বিষয়ে সুসংবাদ’ দেওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়। তাতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।
সেই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একাত্তরের বদর কমান্ডার আলী আহসান মো. মুজহিদ ও বদর বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আর সেই নীলনকশা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেওয়া দুই বদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকেও ২০১৩ সালে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
পলাতক এই দুই বদর নেতা বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াননি। আত্মসমর্পণ না করায় তারা আপিলের সুযোগ হারালেও এখন পর্যন্ত তাদেরকে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করা যায়নি।
জামায়াতে ইসলামী তখনকার সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের এই দুই কেন্দ্রীয় নেতা মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যা করেন বলে রায়ে উঠে আসে।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের তথ্য অনুসারে পলাতক আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গতবছর জানিয়েছিলেন, তারা যোগাযোগ করার পর ব্রিটিশ সরকার বলেছে, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে তারা ফেরত পাঠায় না। আর যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশের আহ্বানে কোনো সাড়া দেয়নি।
ওবাদুল কাদের বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। এই সাম্প্রদায়িক শক্তি এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে।”
সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান কাদের।
ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল