যুবসমাজকে আত্মকর্মসংস্থানে উৎসাহিত করতে বিআইডিএ’র প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান

397

Published on নভেম্বর 9, 2016
  • Details Image

সরকারের উদ্যোগে কর্মসংস্থান ব্যাংক প্রদত্ত বিনা জামানতে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণসহ অন্যান্য সুবিধাদি গ্রহণ করে যুব সমাজ যেন নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই সৃষ্টির জন্য এগিয়ে আসে সে বিষয়ে তাদেরকে উৎসাহিত করার জন্যও বিআইডিএ কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান।

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় সকল ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে দেশে আরো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকালে তার তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের (বিআইডিএ) গভর্নিং বোর্ডের প্রথম সভায় এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের (বিআইডিএ) চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

দেশে আরো বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্যই বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ (বিআইডিএ) আইন-২০১৬ অনুযায়ী প্রাইভেটাইজেশন কমিশন এবং বিনিয়োগ বোর্ডকে একত্রিত করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ (বিআইডিএ) গঠন করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে দেশে আরো যুব উদ্যোক্তা তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের দিকেও বিআইডিএ’কে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, যত্রতত্র কৃষিজমিতে যেন কোন শিল্প কারখানা গড়ে না ওঠে সেজন্য খেয়াল রাখতে হবে। শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য যে জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে, সেখানেই শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে হবে। কোনক্রমেই কৃষিজমি নষ্ট করে শিল্প স্থাপন করা যাবে না।

বিআইডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এর ভবিষ্যৎ করণীয় তুলে ধরেন।

এছাড়া, বৈঠকে বিআইডিএ’কে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে প্রয়োজনীয় বিধিমালা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, জানান প্রেস সচিব।

বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেইন এবং এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে মায়ানমারের সফররত বিমানবাহিনী প্রধান জেনারেল খিন অং মিন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

বৈঠকে তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বৈঠকে মায়ানমারের বিমানবাহিনী প্রধান আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলে তৈরি করা সাইক্লোন সেন্টারগুলোর বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এগুলো তৈরিতে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বিনিময়েও আগ্রহ দেখান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মায়ানমারকে বাংলাদেশের নিকট প্রতিবেশি আখ্যায়িত করে সবসময়ই উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান রাখা এবং পারষ্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই দুটি দেশের সম্পর্ক বহু পুরনো এবং দীর্ঘকাল থেকেই এ দুটি দেশের মধ্যে সীমান্ত এবং সমুদ্র পথে ব্যবসা-বাণিজ্য চলমান রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মায়ানমারের বিদ্রোহী সমস্যার উল্লেখ করে বলেন, প্রতিবেশী দেশের ক্ষতির কারণ ঘটাতে পারে এমন কাউকেই বাংলাদেশ তার মাটি কখনই ব্যবহারের সুযোগ দেবে না।

সীমান্তে মায়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দমনে তাদেরকে সহযোগিতার জন্য জেনারেল মিন্ট প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এখন পরিস্থিতি অনেকটাই মায়ানমারের অনুকূলে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রায় অনুরূপ সমস্যা ও বাংলাদেশ মোকাবেলা করেছে এবং তা তৃতীয় কোন পক্ষের সহযোগিতা ছাড়াই।

জেনারেল মিন্ট এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেরও প্রশংসা করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ এবং মায়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ মিয়ো মিন্ট ও উপস্থিত ছিলেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত