427
Published on নভেম্বর 7, 2016প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মাদ শফিউল আলম বলেন, দরিদ্র প্রবন ৬৪ উপজেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস প্রোগ্রামের ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম পর্যায়ে সম্প্রসারিত হবে।
এতে খাগড়াছড়ির ২ এবং বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির একটি করে মোট ৪ পার্বত্য উপজেলা রয়েছে।
সচিব বলেন, ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম প্রত্যেক পর্যায়ে ২০টি করে উপজেলা থাকবে। পার্বত্য ৪ উপজেলাও এই ৩ পর্যায়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে।
এই কর্মসূচির আওতায় ২০১৭ সালের মে মাস থেকে শিক্ষিত বেকার যুবকদের ৩ মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী দৈনিক ১শ’ টাকা করে ভাতা পাবেন।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেককে প্যারোলে দু’বছরের জন্য বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে দৈনিক ২শ’ টাকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে।
এই কর্মসূচির জন্য সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় ৫৪৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার মধ্যে বর্তমান ২১৫ কোটি টাকা রয়েছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অবশিষ্ট ৩৩০ কোটি টাকাও সরকারই দেবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের আওতায় কুড়িগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও বরগুনা জেলার ১৯ উপজেলার প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৫৬ হাজার ৮০১ জন যুবকের মধ্যে ৫৬ হাজার ৫৪ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে ৩৭ উপজেলায় ১ লাখ ১১ হাজার ১১৬ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকের মধ্যে ১ লাখ ৮ হাজার ৭৮২ জনের প্যারোলো ২ বছরের জন্য বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে চাকরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেক বাড়ির জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের অংশ হিসেবে ২০১০ সালের ৬ মার্চ কুড়িগ্রামে এক অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্ধারিত সময়ে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করতে সময়ের বাধ্যবাধকতার বিধান উঠিয়ে দিয়ে ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৬’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে।
২০১৪ সালে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৬ সালের ৩০ জুনের পর একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বিলুপ্ত হয়ে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ (একীভূত) হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
‘কিন্তু প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় সরকার যখন নির্ধারণ করবে তখন প্রকল্পগুলো ব্যাংকে চলে যাবে,’ বলেন সচিব।
একই সঙ্গে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি আইন, ২০০৬’ এর আওতায় থাকবে না, সমবায় ব্যবস্থাপনার নিজস্ব অফিস হবে,জানান তিনি।
সংসদ অধিবেশন না চলার কারণে এগুলো অধ্যাদেশ আকারে জারি করার সিদ্ধান্ত হয় মন্ত্রিসভায়।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে এদিন, বিদ্যুৎ আদান-প্রদানে বিমসটেক-ভুক্ত দেশসমূহের স্বাক্ষরের জন্য ‘মেমোরান্ডাম অফ অ্যান্ডারস্ট্যান্ডিং ফর এস্টাব্লিস্টমেন্ট অফ দ্য বিমসটেক গ্রিড ইন্টারকানেকশন’ শীর্ষক একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়।
মো. শফিউল আলম বলেন, বিমসটেক-ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বিভিন্ন সেক্টরে কো-অপারেটের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। এখন বিদ্যুতের ক্ষেত্রে কীভাবে কো-অপারেট করতে পারি সে জন্য ইন্টারকানেকশনের জন্য সমঝোতা স্মারকের খসড়া অনুমোদন হয়েছে।
সচিব জানান, বৈঠকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন ২০১৬-এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়। বাংলায় প্রণীত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন ২০১৬-তে ১৯৮৩ সাল থেকে চলমান অর্ডন্যান্সের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে।
সচিব জানান, এই আইনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে সম্প্রসারিত করে নয়জন সদস্যবিশিষ্ট করা হয়েছে এবং চেয়ারম্যান হচ্ছেন বোর্ড প্রধান এবং অন্যান্য ৮ জন সদস্য। বোর্ডের সভা করতে চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম হবে। চেয়ারম্যান সভায় সভাপতিত্ব করবেন। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে বোর্ডের একজন সিনিয়র সদস্য সভাপতিত্ব করবেন।
তিনি জানান, এ ছাড়া আজকের সভায় জাতীয় জৈব কৃষি নীতি ২০১৬ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই আইনে কৃষিজমির মাটি, কৃষি ও পবিবেশের মান রক্ষার জন্য গাইডলাইন সন্নিবেশ করা হয়েছে।
আজকের সভায় প্রখ্যাত চিকিৎসক এম আর খানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবসহ ডা. ফজলুল আজিম এবং ডা. আবুল কাশেমের মৃত্যুতেও শোক প্রস্তাব গৃহিত হয়।