একমাত্র আল্লাহ্‌র কাছেই আমি মাথা নত করিঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

441

Published on আগস্ট 21, 2016
  • Details Image

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে রোববার (২১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ওইদিন গ্রেনেড হামলার পর সেখানে আহত মানুষের সাহায্য দরকার ছিলো। আহত বা আঘাতপ্রাপ্তদের উদ্ধার না করে লাঠিচার্জ করা হয়, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলায় আমরা আইভি রহমানকে হারাই। অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকে হারিয়েছে। অনেকে রক্তাক্ত হয়েছে। চারদিকে শুধু লাশ-লাশ দেখা যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটার পর একটা গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তারা ১৩টি গ্রেনেড মেরেছে। আমার গায়ে রক্ত দেখে অনেকে ভেবেছে আমি আহত। আল্লাহর রহমতে আমার শরীরে কোনো স্প্লিন্টার লাগেনি। হানিফ ভাইয়ের গায়ে লাগে, তিনি রক্তাক্ত হন।

সেদিন গ্রেনেডের ধোঁয়ায় কিছু দেখা যাচ্ছিলো না। চলে যাওয়ার সময় আমার গাড়িতে গুলিও করা হয়েছিলো। তবে বুলেট প্রুপ গাড়ি হওয়ায় গুলি লাগেনি। গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ২১ আগস্টের দিন সমাবেশের আশপাশে পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। কোনো নিরাপত্তাবলয়ও ছিলো না। প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে গ্রেনেড হামলা করে মানুষ হত্যা করা হয়।

২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার পর আরও অনেককে হারিয়েছি। অনেকে স্প্লিন্টার নিয়ে বেঁচে আছেন। যতদিন যাচ্ছে তারা শারীরিকভাবে আসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানান তিনি।

‘এতো বড় একটি ঘটনা। যেখানে বিশ্ব বিবেক নাড়া দিয়েছে। বিএনপি নেত্রী উল্টো আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে, আমাকে একটা নিন্দা প্রস্তাব করতে দেওয়া হয়নি’- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এই ঘটনা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিলেও বিএনপি নেত্রী বা তাদের জোটের বিবেককে নাড়া দেয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন এই যে- এতবড় একটা ঘটনা। যেখানে বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি নেত্রী বা তাদের জোট তাদের বিবেককে নাড়া দেয়নি। উল্টা তারা দোষারোপ শুরু করলো এটা আওয়ামী লীগ নিজে নিজেই করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিরোধীদলে থাকলেও জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে কোন কথা তুলতে পারিনি। এনিয়ে সংসদে কোন আলোচনাই হয়নি। একটি শোক প্রস্তাবও আনা হয়নি। .. এ থেকেই বোঝা যায় এই হামলা কারা ঘটিয়েছে।’


এই হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পাওয়া তৎকালীন বিরোধীদলের নেতা শেখ হাসিনা ’গ্রেনেড হামলা আওয়ামী লীগ নিজেরাই ঘটিয়েছে’ বলে সে সময়ে বিএনপি নেত্রী এবং তাদের নেতৃবৃন্দের কিছু বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য তুলে ধরার পাশাপাশি বেগম জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের ক্যান্টনমেন্টের বাসা ছেড়ে ধানমন্ডি ৫ নম্বরে শ্বশুরের বাসায় ৮-১০ মাস পড়ে থেকে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার কথা উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর কয়েক দিন আগে বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্য জনসভায় বলেছেন প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, শেখ হাসিনা বিরোধীদলের নেত্রীও কোনদিন হতে পারবে না। তারপরে এই হামলা দেখলে কি দাঁড়ায়। আমাদের ভুললে চলবেনা এরাই জাতির পিতার হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী দিবসটির স্মরণে দলীয় কার্যালের সামনে নির্মিত বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে সেদিনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি আরেকটি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।

মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, ১৪ দলীয় নেতৃবৃন্দ এবং ২১ আগস্ট নিহতদের স্বজন এবং সেদিনের আহতরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আহতদের খোঁজ-খবর করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ঘটনার পর তাঁরা সংসদে বসে এ বিষয়ে আলোচনা করতে চাইলেও একটিবার আলোচনার সুযোগ দেয়া হয়নি। একটি শোক প্রস্তাবও আনা হয়নি। উপরন্তু বিএনপি নেত্রীসহ তারা বলল আমাকে (শেখ হাসিনা) আবার কে মারবে। আমরা নিজেরাই নাকি এটা ঘটিয়েছি।’

ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়ে সমাবেশে নিজেরই মেরেছি এমন কথাও তাদের নেত্রী এবং দলের নেতারা বলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটাকে তারা হাস্যস্পদ একটি বিষয়ে পরিণত করতে চাইল। অন্যদিকে এই হামলাস্থলের আলামত ধ্বংসের জন্য সবরকমের প্রচেষ্টা শুরু করল। একটি গ্রেনেড যেটি অবিস্ফোরিত ছিল সে সবসহ সকল আলামত সিটি কর্পোরেশন থেকে পানির গাড়ি এনে ধুয়ে ফেলা শুরু করল।’

তিনি বলেন, এতবড় একটা ঘটনা ঘটার পর সরকারের পক্ষ থেকে কোন আলামত সংগ্রহ করা হবে না, সংরক্ষণ করা হবে না। সেটা কিভাবে সম্ভব। বরং আমরা দলীয় উদ্যোগে আলামত সংরক্ষণের চেষ্টা করেছি এবং তাদের ওপরও বারবার পুলিশি হামলা হয়েছে। বিএনপি সারা বাংলাদেশে রটালো এটা নাকি আমরাই হামলা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সরকার তারা এই ঘটনার কোন তদন্ত করল না, কোন আলামতও সংগ্রহ করল না, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপের কাছে বাধ্য হয়ে কোথাকার কোন গ্রামের এক ছেলে জজমিয়া তাকে নিয়ে এসে তাকে আসামী সাজিয়ে গ্রেনেড হামলা মামলার নাটক তারা করলো।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার প্রশ্ন এইযে এতবড় একটা ঘটনা। যেখানে বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি নেত্রী বা তাদের জোট তাদের বিবেককে নাড়া দেয়নি। উল্টা তারা দোষারোপ শুরু করলো এটা আওয়ামী লীগ নিজে নিজেই করেছে।’

শেখ হাসিনা পুনরায় প্রশ্ন তোলেন-আওয়ামী লীগ কেন এটা করবে, আমরা কি সুইসাইড করতে এসেছিলাম সেখানে। আমরা সেদিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে র্যানলি করতে যেয়ে নিজেরা সন্ত্রাসের শিকার হলাম।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিন পুলিশের তৎপরতায় বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরআগে কোথাও মিটিং করতে চাইলে আমাদের মিটিং করতে দেয়া হত না। হাজার হাজার পুলিশ দিয়ে মিটিংয়ের জায়গা ঘিরে রাখা হত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় সেদিন কোন পুলিশের তৎপরতাই ছিল না। সেদিন পুলিশের কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থাই ছিল না। পুলিশ ছিল নীরব। এমনকি আমাদের নিজস্ব ভলান্টিয়ারদের পর্যন্ত বিএনপি সরকার আশপাশের ভবনের ছাদে উঠে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে দাঁড়াতে দেয় নেই। নিজস্ব কোন নিরাপত্তাবলয় সৃষ্টি করতেও সেদিন দেয়নি। তিনি প্রশ্ন তোলেন- এটি কেন দেয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাবতে অবাক লাগে যে এতবড় একট ঘটনা ঘটার পরেও সেখানে কোন পুলিশি তৎপরতা বা আহতদের উদ্ধারের কোন তৎপরতা ছিলনা। উপরন্তু যেসব নেতা-কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাচ্ছিল পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং উপর্যুপরি টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে।

তিনি বলেন, আমি জানিনা পৃথিবীতে কেউ এরকম ঘটনা শুনেছে কি না।

শেখ হাসিনা বলেন, শুধু লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারসেল মেরেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, এখানে কোন একটি রিক্সা, ভ্যান কোনকিছুই তারা আসতে দেয়নি।

তিনি বলেন, যারা হামলাকারি তারা যেন নিরাপদে এই জায়গা থেকে চলে যেতে পারে সে সুযোগ সৃষ্টির জন্যই তখন বিএনপি সরকারের নির্দেশে পুলিশ একান্ড ঘটিয়েছে।

তিনি সেদিনের কথা স্মরণ করে বলেন, আমি যে মুহূর্তে আমার বক্তব্য কেবল শেষ করে জয়বাংলা বলে হাতের মাইকটা টেবিলে রেখেছি এরমধ্যেই সে গ্রেনেড হামলা শুরু হল। একটার পর এক গ্রেনেড মারা হচ্ছে। আমরা তখন ট্রাকে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ঐ ট্রাকেই বক্তৃতা দিয়ে আমরা তখন র্যা লি নিয়ে রওয়ানা হবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। প্রথম তিনটা গ্রেনেড মারার পরে কয়েক সেকেন্ড সময় যায়, এরপর আবার একটার পর একটা গ্রেনেড। প্রকাশ্য দিবালোকে এই ভাবে গ্রেনেড ছুড়ে মানুষ হত্যা, তখন আমি জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা, এ ট্রাকে আমাদের সকল নেতা-কর্মীরা ছিলেন। আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা তাঁরা ঐ র্যা লিতে সমবেত। একটার পর একটা গ্রেনেড ছোঁড়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, জানি না আমার কি ভাগ্য গ্রেনেড ঐ ট্যাকের ওপরই পড়ার কথা কিন্তুু ডালায় লেগে পাশে পড়ে যায়। আমাকে সাবেক মেয়র হানিফসহ আমাদের যে নেতা-কর্মীরা ছিলেন তাঁরা আমাকে ঘিরে ধরে। আমি টের পাচ্ছিলাম সমস্ত স্প্লিন্টারগুলো হানিফ ভাইয়ের মাথায় এসে পড়ছে আর তাঁর শরীরের রক্ত এসে পড়ছে আমার গায়ে। ১৩টা গ্রেনেড তারা ছুঁড়েছিল। তারমধ্যে ১২টি গ্রেনেডই বিস্ফোরিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐ অবস্থা যখন চলে মনে হয়েছিল কেয়ামত এসে গেছে। আমার চোখের চশমা ছিটকে যায়, দূরে কিছু দেখা যাচ্ছিল না ঐ অবস্থা কিছুটা কাটলে শুরু হল গুলি। আমার সঙ্গেও নিরাপত্তাকর্মীরা যারা ছিল তারা পাল্টা গুলি ছোঁড়ার পরই সেটা থামলো। আমার গায়ে যে পরিমাণ রক্ষ লেগেছিল, অনেকে ভেবেছিল আমি আহত। কিন্তু আল্লাহরই রহমত আমার গায়ে কোন স্প্লিন্টার লাগেনি কিন্তু আমাকে আগলে যারা ছিল হানিফ ভাইয়ের সারা মাথা, অন্যদের সারা শরীর তখন স্প্লিন্টারের রক্ত ঝড়ছিল।

সে অবস্থায় গাড়িতে উঠতে গেলে পুনরায় গুলি করলে বুলেটপ্রুফ গাড়ির জন্য গুলি লাগেনি কিন্তু আমার দেহরক্ষী আর্মির সাবেক সিপাই মাহবুব সেই গুলিতে মারা যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই গাড়ি নিয়ে যখন বের হই চারিদিকে শুধু লাশ পড়ে আছে। আমার দূরে দেখার ক্ষেত্রে সমস্যা থাকায় আরও আমি কিছু দেখতেই পাচ্ছিলাম না। যাবার সময় মাইক নিয়ে আামি রাস্তায় বলে যাই এখানে হামলা হয়েছে। রাস্তায় যেতে যেতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছি। গাড়িটি যখন ধানমন্ডি ৫ নম্বরের পৌঁছল গাড়িটিও তখন বসে গেল। কারণ স্প্লিন্টারে গাড়িটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রেসিডিয়াম সদস্য জিল্লুর রহমান সাহেবও ঐট্রাকে ছিলেন কিন্তু বুঝতে পারেননি যে তাঁর প্রাণপিয় সহধর্মিণী আর নেই। আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ জন নিহত, ২ জন অজ্ঞাতনামা নিহত এবং অন্তত হাজার খানেক নেতা-কর্মী আহত হয়। যাদের অনেকে এখনও শরীরে স্প্লিন্টারের দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন। সারা জীবনের মত পঙ্গুত্ববরণ করেছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিশ্বাস করেনি, যারা বাঙালির অস্তিত্ব বিশ্বাস করেনি। তাদের দোসররাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর ৮৬ সাল পর্যন্ত এদেশে রাত ১২টার পর সকাল ৭টা পর্যন্ত প্রতিরাতে কারফিউ ছিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে, এরপর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে প্রতিরাতে কারফিউ- এভাবেই দেশ চলছিল। এইদেশে বার বার ‘ক্যু’-এর নামে বিএনপি বহু লোককে হত্যা করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। তার বদলে বারবার পেয়েছি গ্রেনেড হামলা, গুলি, বোমা। কিন্তু আমরা থেমে থাকিনি। তিনি এ সময় তাঁর ব্যক্তিগত দৃঢ় বিশ্বাসের পুনরুল্লেখ করে বলেন, আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নির্দিষ্ট কিছু কাজ দিয়েই মানুষকে দুনিয়ায় পাঠান এবং সেই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনিই হেফাজত করেন। না হলে ওই ধরনের গ্রেনেড হামলা থেকে রক্ষা পাওয়া কোনমতেই সম্ভব ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কখনও মৃত্যুকে ভয় করি না। কারও কাছে মাথা নত করি না আল্লাহ ছাড়া। একমাত্র আল্লাহর কাছেই আমি মাথা নত করি। কারণ আমি জাতির পিতার কন্যা, এটা আমি সব সময় মনে রাখি। জন্মালে মৃত্যু হবে, তাই মরার আগে আমি মরতে রাজি না।’

আল্লাহ কিছু মানুষকে কিছু কাজ দিয়ে পাঠান। তা না হলে আমি রক্ষা পেতাম না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট সমগ্র দেশে একইসঙ্গে আধা ঘণ্টায় পাঁচশ’ স্থানে বোমা হামলা চালানো হয়। দেশকে ধ্বংস করতে কিনা করেছে তারা।

ওয়ান-এলিভেনের প্রেক্ষাপট স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৭ সালে ইমরাজেন্সি সককার আমাকে গ্রেফতার করেছে। সমস্ত আঘাত আসে আমার ওপরে। শুধু মামলা নয়, একটার পর একটা ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। তখন ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষর্থীসহ দেশের অনেকে প্রতিবাদ করেছে। ফলে আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলাম।

বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দারিদ্র্য বিমোচনে বহুমুখী কর্যক্রম নিয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দূর করতে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছি।

গোটা বিশ্বের অস্থিরতা কথা উল্লেখ তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমেরিকার মতো জায়গার মসজিদের ইমাম নামাজ পড়ে ফিরছেন, তখন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার ঘটানা সারা বিশ্বে ঘটে যাচ্ছে।

জনগণের শক্তি হচ্ছে বড় শক্তি, সমাজের সব স্তরের মানুষ যদি রুখে দাঁড়ায়, তবে এই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের ঘটনা দেশকে মুক্ত করা সম্ভব বলে মনি করেন তিনি।

এ সময় সেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রাশাসনের ঊধর্বতন কর্মকর্তাসহ দলীয় শীর্ষ পর্যায়ে নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত