সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সমগ্র দেশব্যাপী জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবেঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

444

Published on জুলাই 13, 2016
  • Details Image

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সমগ্র দেশব্যাপী জনসচেতনতা গড়ে তুলে জনগণের শক্তি দিয়েই আমাদের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে মোকাবেলা করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গণভবন থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে তাঁর উদ্যোগের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবন, রাঙ্গামাটি, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুিমল্লা, নোয়াখালি, চাঁদপুর, ফেণী, লক্ষীপুর’সহ ১৫টি জেলার সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী, এনজিও কর্মী, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষকদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে এ আহ্বান জানান।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.আবুল কালাম আজাদ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যখন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সারাবিশ্বব্যাপী এত উজ্জ্বল,যখন আমরা আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছি সেই সময় এই ঘটনা ঘটিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করা, উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা, দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়ার একটা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই আমি মনে করি আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন করতে হবে ,বাংলাদেশকে এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে মুক্ত করতে হবে, মানুষের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলের শান্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমি মনে করি- আমাদের মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন সহ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ, প্রশাসনে যারা কর্মরত, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি সংস্থা (যেমন-পুলিশ, বিজিবি, রযাশ ব, আনসার-ভিডিপি), জনপ্রতিনিধিরা আছেন (ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, মহানগর, জেলা এবং সংসদ সদস্যবৃন্দ) এবং সমাজসেবক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার যারা আছেন সকলকেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এই জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।

প্রধানমন্ত্র্রী আরও বলেন, আজকে তাঁর সরকার বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছে, মানুষের সামগ্রিক আয় বৃদ্ধি করেছে, খাদ্যে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। আজকে মানুষের মধ্যে আর সেই হাহাকার নাই। তিনি বলেন, আমরা দারিদ্র বিমোচন করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গৃহায়ণ কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র জনগণকে ঘর-বাড়ি করে দিচ্ছি, স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোঁড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি-যতদূর সম্ভব আমরা দেশের সেবা করে যাচ্ছি, মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদি গোষ্ঠী প্রকৃত অর্থে ইসলাম ধর্মেরই ক্ষতি সাধণ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,যখন মানুষের কল্যাণ হচ্ছে, মানুষের মাঝে একটা স্বস্তি ফিরে এসেছে, আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে ঠিক সেই সময় এই ঘটনাটা ঘটিয়ে আমাদের সমগ্র বিশ্বের সামনে যেমন আমদেরকে হেয় করছে সেই সাথে আমি মনে করি-মুসলমান হয়ে মুসলমানকে হত্যা করে এই পবিত্র ইসলাম ধর্মটাকেই আজকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে।

প্রানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমাদের এই পবিত্র ধর্মকে কেউ হেয় করবে এটা আমরা বরদাশত করব না।

প্রধানমন্ত্রী পিতা-মাতা, অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্ন উত্থাপন করে নিজেদের সন্তানদের প্রতি যতœবান হবার আহবান জানিয়ে জঙ্গিবাদ দমনে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক এলাকায় জঙ্গিবাদ বিরোধী কমিটি, কোর কমিটি গঠন করে আড়ালে আবডালে ঘাপটি মেরে থাকা জঙ্গি, নিখোঁজ ব্যক্তি এবং গোপন তৎপরতাকে খুঁজে বের করতে সবাইকে তৎপর হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাবৃন্দ নিজ নিজ এলাকায় জঙ্গিবাদ দমনে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করায় তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দল-মত নির্বিশেষে সকলকে এ ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারও আহবান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার মাধ্যমে আমাদের জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একজোট হয়ে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় এবং উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করে যেতে হবে।’

এ সময় তিনি ঈদের জামাতে হিন্দু ভলান্টিয়ারদের নিরাপত্তা প্রহরা দেবার দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে এটাকেই সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আবহমান বাংলার চিরায়ত রুপ এবং এই দেশ সাংবিধানিকভাবেই সকল ধর্মবলম্বীদের আবাসস্থল বলেও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফরেন্সে দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়েও সকলকে সতর্ক করে দেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত