421
Published on মে 11, 2016প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আজ সকালে গণভবনে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলপত্র হস্তান্তর করা হয়। এ সময় এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সারা দেশের ৮টি শিক্ষাবোর্ডের আওতাধীনে এ বছর অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) এবং সমমানের মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষার ফল আজ প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর পাশের হার ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর করেন।
এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোহরাব হোসাইনসহ সকল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন।
ফলাফল গ্রহণকালে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বর্তমান সরকার প্রদত্ত নানাবিধ সুযোগ-সুবিধার সুযোগ নিয়ে পাঠে আরো মনোনিবেশ করার আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেখানে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছি সেখানে শিক্ষার্থীদের বেশি মাত্রায় ফেল করার কোন মানে হয় না।’
এ বিষয়ে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশের উন্নয়ন, ভবন নির্মাণ ও সংস্কার, বৃত্তি প্রদান এবং প্রতিবছর মাধ্যমিক পর্যন্ত সারা দেশে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সরকারি উদ্যোগের প্রসংগ উত্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার নিম্ন মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আর্থিক সুবিধা প্রদানে ট্রাষ্ট ফান্ড গঠনের মাধ্যমে বৃত্তি চালু করেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম চালুর কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রকৃত শিক্ষা ছাড়া কোন জাতিই উন্নত হতে পারে না-এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ জন্যই সরকার সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষারও বন্দোবস্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বিশ্বে চাহিদার কথা বিবেচনা করেই সরকার কারিগরি ও পযুক্তিগত শিক্ষার ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করেছে। যাতে করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম বর্তমান প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে।
এ কারণে সরকার শিক্ষকদের জন্যও আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও তিনি জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার স্কুল পর্যায়ে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। যাতে করে শিক্ষার্থীদের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধ গড়ে উঠতে পারে। ভবিষ্যত নাগরিকদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ এবং বৃত্তি চালুর সরকারি উদ্যোগের ফলে অভিভাবকদের ওপরকার অর্থনৈতিক চাপ অনেকাংশেই কমে এসেছে।
সরকারিভাবে দেশে বিশাল পরিমাণে মেধাবৃত্তি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘এতো মেধাবৃত্তি অন্য কোনো দেশ দেয় কিনা আমি জানি না।’
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার গৃহিত বিশ্বমানের সুযোগ- সুবিধা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যতে আর কোন শিক্ষার্থীই পরীক্ষায় ফেল করবে না।
পরীক্ষায় ভালো ফলাফলকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষায় পাশের হার বেড়েছে, যদিও কেউ কেউ কৃতকার্য হতে পারে নি।
তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা মেধাবী। তাই আর যাই হোক তারা পরীক্ষায় ফেল করতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠবে। যাতে করে তারা অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দি¦তায় অবতীর্ণ হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন-আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আগামী প্রজন্ম নতুন নতুন আবিস্কারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেবে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আর কারো কাছে হাত পাতবে না। বাংলাদেশ তার জনশক্তি এবং নিজস্ব সম্পদকে কাজে লাগিয়ে নিজের পায়ে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
তিনি এ সময় ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে পরিণত করার তাঁর সরকারের লক্ষ্যের কথাও পুনব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী এসময় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঝালকাঠি এবং পঞ্চগড় জেলার জেলা পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থী,শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।