652
Published on ফেব্রুয়ারি 3, 2016বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সিরাজুল হক খান বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে প্রকল্পের অগ্রগতির তথ্য উপস্থাপন করেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, “বৈঠকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ও দ্রুততার সঙ্গে শেষ করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।”
পাবনার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর চুক্তি হয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের।
সে অনুযায়ী, ২৪০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হবে; যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১ লাখ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা)।
৫০ বছর আয়ুর এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২১ সালের মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৪ সালের অগাস্টে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় কোম্পানি গঠন করতে সংসদে বিল পাস হয়।
আইন অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের হাতে। আর কেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্ব পাবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ’।
১৯৬১ সালে পরামাণু কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার পর ১৯৬৩ সালে প্রস্তাবিত ১২টি এলাকার মধ্য থেকে বেছে নেয়া হয় রূপপুরকে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রায় ৫০ বছর আগের নেয়া সেই উদ্যোগ সক্রিয় করে তোলা হয়। দ্রুত পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০১০ সালে সংসদে প্রস্তাব পাস করে গঠন করা হয় একটি জাতীয় কমিটি।
ওই বছরই রাশিয়ার সঙ্গে একটি কাঠামো চুক্তি করে সরকার এবং ২০১১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ দুই দেশ চুক্তি করে। প্রস্তাবিত এ কেন্দ্রের জন্য আগেই অধিগ্রহণ করা হয় ২৬২ একর জমি।
অ্যাটমস্ট্রয়ের নকশায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত ‘সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি’ দিয়ে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এর নিরাপত্তা নিয়ে ‘দুশ্চিন্তার কিছু’ থাকবে না। চুক্তি অনুযায়ী, এই কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়াই ফেরত নিয়ে যাবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের জাতীয় কমিটির তৃতীয় বৈঠক হয়েছিল ২০১৩ সালের ৭ অগাস্ট।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার চতুর্থ বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান এসএ সামাদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, মশিউর রহমান, তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।