385
Published on ডিসেম্বর 25, 2015গত বুধবার এই চুক্তির প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় সরকার। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর হোটেলে সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ পারমাণবিক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয়এক্সপার্টের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুভাষ কিং চুক্তিপত্রে সই করেন।
চুক্তি বাস্তবায়নের সময়কাল সাত বছর ধরা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ এবং পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল সৃষ্টি করবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এরপর মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ করেছে এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট।
রাশিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে ১৩ দফা আলোচনার ভিত্তিতে ৪৭টি অনুচ্ছেদ এবং ৫৭৩টি উপ-অনুচ্ছেদে চুক্তিটি চূড়ান্ত করা হয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মূল চুক্তি এটি; যেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নকশা, যন্ত্রাংশ সরবরাহ, কেন্দ্র নির্মাণ, উৎপাদন, নিশ্চয়তা বা গ্যারান্টি, পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ, বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত যন্ত্রাংশ পরিবহন এবং গ্যারান্টি পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন সেবা প্রদানের কথা উল্লেখ রয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নের সময়কাল সাত বছর ধরা হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, পাকিস্তান আমলেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একই স্থানে রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম অবস্থায় ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা থাকলেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কঠিন এক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম বর্জ্য অত্যন্ত নিরাপত্তার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। তবে বাংলাদেশের জন্য দুরুহ এই কাজটির দায়িত্ব নিয়েছে রাশিয়া। এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো দিক যে রাশিয়াই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবে। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করা হবে বলেও অর্থমন্ত্রী জানান।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী বলেন, রাশিয়া বন্ধুপ্রতীম দেশ। রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণের সহযোগিতা করার জন্য রাশিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। সভাপতির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, বাংলাদেশ ভাগ্যবান। বন্ধবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া অনেক অসমাপ্ত কাজ তারা মেয়ে শেখ হাসিনা অনেকটাই পূরণ করেছেন।
ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তৌফিক-ই-এলাহী, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তারা।