410
Published on অক্টোবর 26, 2015প্রথম পর্যায়ে মেট্রোরেল রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের ৫ বছর আগেই শেষ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবেদনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাফল্য ও কর্মকা- তথা দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি মন্ত্রিসভার কাছে গুরুত্বসহকারে উপস্থাপন করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের মাথাপিছু আয় আগের বছরের তুলনায় বেড়ে ২০১৪-’১৫ অর্থবছরে হয়েছে ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলার। এর আগের বছর মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ১৯০ ডলার। একই সময়ে দেশের রফতানি ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পণ্যের বহুমুখীকরণ, সরকারি পদক্ষেপ এবং রফতানিকারকদের কঠোর পরিশ্রমের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের বার্ষিক রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ দশমিক ৫০ কোটি টাকা। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৫৫১ দশমিক ৫০ কোটি টাকা বেশি। দেশের রেমিট্যান্সের হার ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪-’১৫ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি। এই সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশী টাকাও ছিল স্থিতিশীল।
২০১৪-’১৫ অর্থবছরের শেষে সাধারণ মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২০১৩-’১৪ অর্থবছরের শেষে এই হার ছিল ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সময়ে ২৪৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে মোট ২২৬টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। যাতে উন্নয়ন বরাদ্দের ৯৫ শতাংশের ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষি, কৃষি গবেষণা ও পুনর্বাসন সহায়তায় ভর্তুকি প্রদান এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের আর্থিক সমর্থন কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে।
সরকার ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ভর্তুকি হিসেবে কৃষকদের মধ্যে ৭ হাজার ১০১ দশমিক ০৫ কোটি টাকা বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ভর্তুকি ধান, গম, পেঁয়াজ, সবজি, মাংস, দুধ, ডিমসহ কৃষি পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দেশে ডিজিটাল সেবার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। ৮০০ সরকারি স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্র ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে। ৪৮৫টি হাসপাতাল বিনামূল্যে টেলি-মেডিসিন সেবা প্রদান করছে। ১২ কোটি ৬৮ লাখ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। ৪ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ইন্টারনেটের গ্রাহক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। ৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (ডিইই) অবকাঠামোগত কাজ ৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালি পর্যন্ত বিস্তৃত এর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। সরকার কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে একটি টানেল নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করার পর সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মন্ত্রিপরিষদ, মন্ত্রিসভা কমিটি এবং নিকারের সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে কেবিনেট কিছু সুপারিশ প্রদান করেছে।
মন্ত্রিসভা সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। পাশাপাশি মন্ত্রিসভা দারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচির (এসএসএন) যথাযথ বাস্তবায়নের ওপরও জোর দিয়েছে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী জনগণ যাতে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে সেজন্য মন্ত্রিসভা সকল সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেও বলেছে। মন্ত্রিসভা শিক্ষার মান উন্নয়নে বছরের শুরুতেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণেরও সুপারিশ করেছে।
মন্ত্রিসভা বিদ্যুতের সিস্টেম লস বর্তমান পর্যায় থেকে কমিয়ে আনতে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।