385
Published on জুলাই 7, 2015ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সের সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রুশনারা আলী, রূপা হক ও টিউলিপ রেজওয়ান সিদ্দীককে ধন্যবাদ জানানোর জন্য আনীত প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা শেষে এ তিন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কন্যার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত হওয়ায় আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সরকারি দলের সদস্য ডা. দীপু মনি এ ধন্যবাদ প্রস্তাব আনেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্রিটিশরাই ২শ’ বছর বাংলাদেশ শাসন করেছে। আজকে সেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাঙালি সদস্য নির্বাচিত। তারা নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের মানুষের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তারা তিনজন নির্বাচিত হয়েছে, এটা জাতির গৌরবের বিষয়। এ তিন কন্যার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।
তিনি বলেন, ‘ত্যাগ ছাড়া কখনও কোন মহৎ কাজ সাধন করা সম্ভব নয়। একথা জাতির পিতা বলেছেন, এটা আমরা সব সময় মনে রাখি। বাংলাদেশের মানুষ উন্নত ও সুন্দর জীবন পাক, সেটাই আমাদের কামনা। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। আমরা বিজয়ী জাতি, সেই বিজয়ের মুকুট যেন আমাদের মাথায় সব সময় শোভা পায়, এজন্য আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮১ সালে যখন দেশে ফিরে আসি, তখন জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিল, তখন তার নির্দেশ ছিল আমরা যেন কোনভাবেই দেশে ফিরতে না পারি। সেভাবেই সে বাধা দিয়েছিল। ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। অনেক বাধা অতিক্রম করে আমাদের চলতে হয়েছে। যেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল, ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। দেশের সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুর নাম ভুলেনি। এজন্য আমি দেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ।
আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মাহবুব উল আলম হানিফ, আব্দুল মান্নান, বেগম সানজিদা খানম, সাগুফতা ইয়াসমিন, এডভোকেট আবু জাহির, একেএম শাজাহান কামাল, বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী, মো. মনিরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির সদস্য পীর ফজলুর রহমান ও স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎবরণের পর শেখ রেহানা ও তাঁর নিজের সংগ্রামী জীবনের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ রেহানা প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ও আমার বোন হয়েও কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা কখনও নেননি। উপরন্তু সংগ্রামী জীবন অতিবাহিত করেছেন। নিজের ছেলে-মেয়েদের এবং আমার ছেলে-মেয়েদেরও মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলার দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শে আমাদের সন্তানদের বড় করেছি, তারাও দেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিত। তিনি দেশবাসীর কাছে টিউলিপের জন্য দোয়া চান।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে লন্ডনে থাকা খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান টিউলিপ যাতে নির্বাচিত হতে না পারে, সেজন্য অনেক বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে। ভোটারদের ওপর হামলা করাসহ এমন কোন অপপ্রচার নেই, যা সে করেনি। শত বাধা অতিক্রম করে টিউলিপকে নির্বাচিত করার জন্য তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সের সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিনজন নারীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার টিউলিপ সিদ্দীকসহ তিন নারী ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সদস্য নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা দুটি নাম দুঃখের অক্ষরে লেখা। এ দু’জনই সারা জীবন লড়াই করেছেন। তাদেরই প্রজন্ম টিউলিপ সিদ্দীক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সে আরো অনেক দূর যাবেন।
ছবিঃ ফোকাস বাংলা নিউজ