427
Published on মে 7, 2015শেখ হাসিনা বলেন, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করার মতো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ যাতে আর কেউ করতে না পারে, এ জন্য যারা এ ধরনের অপরাধ করবে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। তারা কোন ক্ষমা অথবা ছাড় পাবে না। আর যাতে কেউ এমন অপরাধ করতে না পারে, এ জন্য তাদেরকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের অধিন বিভিন্ন সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তার সূচনা বক্তব্যে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সামনে দুটি চ্যালেঞ্জ। একটি সন্ত্রাস এবং অপরটি জঙ্গিবাদ। তিনি বলেন, আমরা দু’ধরনের জঙ্গিবাদ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। একটি পেশাদার জঙ্গিবাদ এবং অপরটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মদদে জঙ্গিবাদ।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশে জঙ্গিবাদ যাতে আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এ জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করেছে। তিনি বলেন, এ ধরনের আন্দোলন আমি কখনো দেখিনি।
বিএনপি-জামায়াত জোটের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচির উল্লেখ করে বলেন, কেউ জানে না অবরোধ আছে কিনা। আমি জানি না বিএনপি নেত্রী অবরোধ প্রত্যাহারে লজ্জা পান কিনা।
প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে ও অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়ে নিরীহ লোকদের জীবিত পুড়িয়ে হত্যা করেছে এবং আরো কয়েকশ’ লোক আহত করেছে যাদের আমৃত্যু এর যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে।
‘মানুষ আল্লাহতায়ালার সেরা সৃষ্টি, তবে বিএনপি-জামায়াত পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে এবং পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মতো ঘৃণ্য কোন কাজ নেই।
বিএনপি-জামায়াতের কথিত তিন মাসের আন্দোলন সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ ৯২ দিন তার অফিসে অবস্থান করে খালেদা জিয়া কিছু অর্জন করেননি বরং সাধারণ মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছেন।
সন্ত্রাসীদের দমন এবং বিএনপি-জামায়াত জোটের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম রোধের পাশাপাশি তিনটি সিটি কর্পোরেশনের অবাধ, স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সংস্থাগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আওয়ামী লীগের জনসভায় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন দিবালোক ঘৃণ্য ওই হামলার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত সরকার জড়িত। তিনি এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার ত্বরান্বিত করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা সংস্থাগুলোর প্রতি নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচার জোরদার করুন এবং তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করুন।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন ও কল্যাণে গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনী, বিজিবি, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এবং পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের আধুনিকায়নে সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়োগে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া জোরদারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে তাঁর সরকার পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে কাজ করছে।
এক্ষেত্রে তিনি দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং দেশের বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশকে আরো এগিয়ে নেয়া ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আমরা এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ভূ-কম্পন প্রবণ এলাকা হওয়ায় ভূমিকম্প সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তুলতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল