406
Published on এপ্রিল 6, 2015এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে নিজ নিজ এলাকায় প্রথমে গৃহহীন মানুষ খুঁজে বের করা এবং তাদের জন্য খাসজমি বরাদ্দ দেয়া ছাড়াও গৃহনির্মাণে আশ্রয়ন প্রকল্পের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী সোমবার পটুয়াখালী ও নেত্রকোনা জেলা উন্নয়ন কমিটি এবং বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নির্দেশ দেন।
শরীয়তপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা উন্নয়ন কমিটি এবং ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা অনলাইনে এই ভিডিও কনফারেন্স প্রত্যক্ষ করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম মোশাররাফ হোসেইন ভূইঞা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে কেউ গৃহহীন থাকবে না। কারণ বাসস্থানের সুবিধা মানুষের মৌলিক অধিকারভুক্ত। এছাড়া নদীভাঙ্গন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘর-বাড়িহারাদের প্রত্যেকের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক কর্মকর্তাকে গৃহহীন মানুষদের কৃষিভিত্তিক কর্মে নিয়োজিত করার পথ খুঁজে বের করা এবং দ্রুত দারিদ্র্য বিমোচনে সরকার কি ধরনের সম্পূরক সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি গ্রহণ করবে তা নির্ধারণ করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
প্রত্যেককে দেশের উন্নয়নে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আবাদি ও জলাশয়ের এক ইঞ্চি জমিও অব্যবহৃত থাকবে না। মানুষের কাজে লাগে এমন যে কোন কিছু চাষ করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের খাদ্য ভান্ডার হিসাবে পরিচিত বরিশাল বিভাগ দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার এর গৌরব পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে এ বিভাগের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধিত হয়েছে। পায়রা বন্দর নির্মিত হয়েছে এবং বরিশালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু হবে। কলকারখানা সম্প্রসারণে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে বরিশাল বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বিগত তিন মাসে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ও অবরোধের কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা উল্লেখ করে বলেন, গত কয়েকদিন আগে জাতি খুবই খারাপ সময় পাড়ি দিয়েছে। তিনি এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ভিডিও কনফারেন্সের প্রধান উদ্দেশ্য হলো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কে অবহিত হওয়া এবং তিনি উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জেলার কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে একটি উন্নত এবং সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। তিনি বলেন, একটি দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
আমরা ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে অগ্রসর হতে পারলে বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ থাকতে পারে না। তিনি আরো বলেন, সরকার গৃহীত প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে হবে পল্লীর অর্থনীতি চাঙ্গা করতে এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে।
প্রধানমন্ত্রী সামাজিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব জনগনের জন্য কাজ করা। কোন রাজনৈতিক দল মানুষ পুড়িয়ে মারতে পারে না। কোন নিরীহ মানুষ রাজনৈতিক জিম্মি হতে পারে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনীতি ধ্বংস করতে পারে না।
বাংলাদেশের জনগণ গত কয়েক মাসের বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসী কর্মকা- কখনো ভুলবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল সব সময় একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এলাকার জনগণ দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বসবাস করে। বর্তমান সরকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে এই অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, তাঁর সরকার পটুয়াখালীকে একটি সুন্দর এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। তিনি বলেন, বরগুনা ও পটুয়াখালীতে শিপ বিল্ডিং এন্ড শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বরিশালে একটি নৌবাহিনী ঘাঁটি স্থাপন করা হয়েছে এবং বরিশাল, পটুয়াখালী ও ঝালকাঠির মাঝামাঝিতে একটি আর্মি ডিভিশন গঠন করা হবে।
বরিশালের নদীগুলো দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হবে।
ছবিঃ ফোকাস বাংলা