1957
Published on ফেব্রুয়ারি 17, 2015সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মেয়াদে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করবে।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)এই সভায় ৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অনুমোদিত ৬টি প্রকল্পের মধ্যে ৩টি নতুন এবং ৩টি সংশোধিত প্রকল্প। অপরদিকে, মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য ৪৫৩ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৯ কোটি টাকা।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদিত প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান।
দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের মাসে কত টাকা করে উপবৃত্তি দেয়া হবে সে সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর ক্ষেত্রে মাসিক উপবৃত্তি হবে ১০০ টাকা, ৮ম শ্রেণীর ক্ষেত্রে তা ১২০ টাকা এবং ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর ক্ষেত্রে মাসিক উপবৃত্তি ১৫০ টাকা।
অপরদিকে, ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত মাসিক ১৫ টাকা হিসেবে টিউশন ফি দেয়া হবে। ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর ক্ষেত্রে তা ২০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এসএসসি পরীক্ষা ফি বাবদ বার্ষিক এককালীন ৭৫০ টাকা করে দেয়া হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রতি শ্রেণীতে মোট ছাত্রীর ৩০ ভাগ এবং মোট ছাত্রের ১০ ভাগ এই উপবৃত্তি পাবে। অন্যদিকে, উপবৃত্তির প্রধান প্রধান শর্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, অভিভাবকের জমির পরিমাণ ৭ ডেসিমেলের নিচে এবং বার্ষিক আয় ৫০ হাজার টাকার নিচে হতে হবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীকে ন্যূনতম ৭৫ ভাগ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে। ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে বার্ষিক পরীক্ষায় ন্যূনতম ৩৩ ভাগ নম্বর পেতে হবে। ৮ম ও ৯ম শ্রেণীর ক্ষেত্রে তা ৪০ ভাগ।
তিনি বলেন, অন্য শর্ত হলো এসএসসি অথবা দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থীকে অবিবাহিত হতে হবে। উপবৃত্তি বিতরণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং বা বিকাশ বা অন্য কোন সহজ পদ্ধতিতে সরাসরি যোগ্য শিক্ষার্থীদের মাঝে এই উপবৃত্তি প্রদান করা হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, অর্থের অভাবে কারো লেখাপড়া যেন বন্ধ না হয়ে যায় সে বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়। তিনি বলেন, যে পর্যন্ত আমরা শতভাগ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে না পারবো ততদিন পর্যন্ত এ প্রকল্পটি চলমান থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ প্রকল্পটি চলমান থাকলে মাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার কমে আসবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সারা দেশে ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ষ্ঠ থেকে ¯œাতক পর্যন্ত উপবৃত্তি কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়াও গত একনেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে আরো একটি উপবৃত্তি সংক্রান্ত প্রকল্পেরও অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে, রাজধানী ঢাকার ১২টি এলাকায় গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার চালু হচ্ছে। এ জন্যে আজ অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ‘ইনস্টলেশন অব প্রি-পেইড গ্যাস মিটার ফর টিজিটিডিসিএল’ নামে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। মোট ৭১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২৩৭ কোটি টাকা। প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাইকা ৪৫ কোটি টাকা দেবে। বাকি ২ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে পাওয়া যাবে।
প্রকল্পটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গৃহস্থালী পর্যায়ে গ্যাসের অপচয় রোধে সরকার ঢাকার ১২টি এলাকায় ২ লাখ প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এলাকাগুলো হলো বাড্ডা, গুলশান, তেজগাঁও, ক্যান্টনমেন্ট, মিরপুর, কাফরুল, খিলক্ষেত, উত্তরখান, দক্ষিণখান, উত্তরা, পূর্বাচল ও ঝিলমিল। বর্তমানে এডিপি’র অর্থায়নে মোহাম্মদপুর ও লালমাটিয়ায় ৪ হাজার প্রি-পেইড মিটার চালু রয়েছে। এর সফলতা বিবেচনায় নিয়েই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাজধানীর পুরো ২৪ লাখ গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে একাজ করা হবে। এতে অপচয় রোধের মাধ্যমে সিস্টেমলস কমে আসবে বলে তিনি জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী এ সময় পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, রাজধানীতে পুরোপুরিভাবে প্রি-পেইড মিটার ব্যবহার করা গেলে যে পরিমাণ গ্যাস বেঁচে যাবে তা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগালে তা থেকে দৈনিক ৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, প্রি-পেইড মিটার যাতে এ দেশেই তৈরি করা যায় এবং সিলিন্ডার গ্যাস যাতে শহর ও গ্রামপর্যায়ে সুলভে ও সস্তায় পাওয়া যায় সে ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।