412
Published on জানুয়ারি 24, 2015তিনি বলেন, ‘জনগণকে ভয় দেখাতে এবং উন্নয়নের গতি ব্যাহত করতে বেগম জিয়া মানুষ পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি চালু করেছেন। তবে এ ধরনের রাজনীতির অবসান ঘটবে এবং আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি- মানুষ পুড়িয়ে মারা বন্ধে তার (খালেদা জিয়া) শুভবুদ্ধি দিন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সেরা এবং মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো ঘৃণ্য কাজ আর কিছুই নেই। যাদের হাতে মানুষ পোড়ার গন্ধ ও দাগ লেগেছে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- কোন্ স্বার্থে তারা এ ধরনের অপরাধ করছে।’
আজ বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার মধুমতি নদীর ওপর স্থানীয়ভাবে পাটগাতি ব্রিজ হিসেবে পরিচিত ও নবনির্মিত শেখ লুৎফর রহমান ব্রিজের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও হাইওয়ে বিভাগ প্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৯১ দশমিক ৫ মিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৫ মিটার প্রশ্বস্ত সেতুর পাশাপাশি গোপালগঞ্জ-পিরোজপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এ ছাড়াও শেখ হাসিনা নবনির্মিত টুঙ্গিপাড়া বিআরটিসি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলা ও নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মধ্যে মধুমতি নদীর ওপর ‘কালনা ব্রিজ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব আবুল কালাম আজাদ ও প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী গনভবনে উপস্থিত ছিলেন।
পাশাপাশি, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, বাগেরহাট এবং পিরোজপুর জেলার সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট জেলাসমূহের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারগন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি- জামায়াত জোটের নৈরাজ্য ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের উল্লেখ করে, প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি- জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের কারনে অনেক মায়ের কোল খালি হয়েছে এবং বহুসংখ্যক মানুষ পঙ্গুত্ব বরন করেছেন।
‘যারা অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন, তারা আর কাজ করতে পারবেন না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন পরিচালকের মাধ্যমে তিনি প্রতিদিন তাদের (অগ্নিদগ্ধ) খোঁজ-খবর রাখছেন।
বিএনপি- জামায়াতকে হরতাল ও অবরোধের নামে তাদের প্রতিদিনের নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা এবং মানুষ পুড়িয়ে মারার জন্য সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অতীতে আমরা জনগনের স্বার্থে বহু আন্দোলন করেছি। কিন্তু আমরা এ ধরনের আন্দোলন দেখি নাই।’
তিনি খেদোক্তি করে বলেন, ‘তারা সাধারন মানুষকে মারছে এবং ৫০/ ৬০ জন ট্রাক চালককে পুড়িয়ে মেরেছে এবং ট্রেন, বাস ও অন্যান্য যানবাহন পুড়িয়েছে। শিশু, নারী, শিক্ষক এবং বাসের যাত্রী কেউই তাদের হাত থেকে রেহাই পাননি।’
তিনি বলেন, ‘তারা এ ধরনের অপরাধ করে নাশকতামূলক কর্মকান্ডের জন্য সরকারের উপর দোষ চাপাচ্ছে’।
তিনি বলেন,যদিও দেশে গত একবছর ধরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে এবং আন্দোলনের কোন ইস্যু নাই, তারপরেও বিএনপি- জামায়াত দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার উন্নয়নের রাজনীতি এবং দেশ ও জনগনের কল্যাণে বিশ্বাস করে এবং প্রত্যেক ঘরে ঘরে স্বাধীনতার ফল পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, উদ্যোগের অংশ হিসেবে সারা দেশে সেতু, সড়ক এবং অন্যান্য বৃহদাকার অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, নবনির্মিত শেখ লুৎফর রহমান সেতু গোপালগঞ্জ ও আশেপাশের অঞ্চলের যোগাযোগ ও পন্য পরিবহনে ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে।
পদ্মা ও কালনা সেতুর নির্মাণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এই দুইটি সেতু বাংলাদেশকে এশিয়ান হাইওয়ের রুট-১- এর সাথে সংযুক্ত করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চল সবসময়ই অবহেলিত ছিল, কেননা এ অঞ্চলের জনগন আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়।
তিনি বলেন, কিন্তু তাঁর সরকার দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে তাল মিলিয়ে এ অঞ্চলের সুষম উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার আগামি প্রজন্মের জন্য সুন্দর ও সমৃদ্ধ ভবিস্যৎ রেখে যেতে চায়, কেননা দেশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনারবাংলা হবার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল