500
Published on অক্টোবর 2, 2014
ঢাকায় কূটনীতিকরা বলছেন, এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব সংহতকরণের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সার্বিক বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি সংহতকরণে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরকারের সাফল্য তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের ৪০তম বার্ষিকী উদযাপনকালে সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ একটি স্মরণীয় ঘটনা।
২৭ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী ভঙ্গুর নিরাপত্তা পরিস্থিতি, ধর্মীয় জঙ্গিবাদের উত্থান এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চরমপন্থীদের সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের হেফাজতকারী হিসেবে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেসব অশুভ শক্তি বিভিন্ন জাতির ধর্মনিরপেক্ষ নীতিমালা ধ্বংস করছে তাদের নির্মূল করতে হবে।
শেখ হাসিনা ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের স্বার্থে বাংলাদেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন কামনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উচ্চতর পর্যায়ে সততা, নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন দাগী অপরাধীর বিচার সম্পন্ন করেছে। এসব অপরাধী মুক্তিযুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে।
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং জাতিসংঘ ও কমনওয়েলথসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন। শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এমা সোলবার্গ, বেলারুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল ভি. মিয়াসনিকোভিচ এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশিল কৈরালার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন।
প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফাস্টলেডি মিশেল ওবামার দেয়া সংবর্ধনা অন্যান্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগ দেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের দেয়া সংবর্ধনা ও ভোজসভায়ও যোগ দেন।
শেখ হাসিনা জাতিসংঘ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন ২০১৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং ভাষণ প্রদান করেন। তিনি মার্কিন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন এবং ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সহায়তা করতে একটি নতুন বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব সৃষ্টির জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদার বিনিয়োগ সুযোগ-সুবিধার কথা তাদের কাছে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের একটি আলোচনায় যোগ দেন এবং জাতিসংঘ সদর দফতরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা অভিযান সংক্রান্ত একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনসহ বাংলাদেশের বন্ধুরা দেশের উন্নয়নসহ বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।
তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্যও শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে বান কি মুন ছাড়াও জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আমীরা হক, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই, রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী গেন্নাদি গাতিলভ, যুক্তরাষ্ট্রে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত পিটার ওয়েস্টমাকট, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিনোদ কুমার, ইউএনডিপি’র প্রশাসক হেলেন ক্লার্ক এবং ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকভাও বক্তৃতা করেন।
শেখ হাসিনা প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি সংবর্ধনাও যোগ দেন।
-বাসস