প্রাকৃতিক দুর্যোগমুক্ত পৃথিবী গড়তে কার্বন নির্গমন হ্রাসে উন্নত দেশগুলোর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান

449

Published on সেপ্টেম্বর 23, 2014
  • Details Image

তিনি বলেন, কার্বণ হ্রাস এবং জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলায় সামর্থ অর্জনের মহাসড়ক ধরে অগ্রসর হতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কার্বণ নির্গমনকারী বৃহৎ দেশগুলোর উচিত আমাদের অনুরূপ প্রচেষ্টা চালানো।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ কখনো উন্নয়নশীল বিশ্বের গড় মাথাপিছু নির্গমনের সীমা অতিক্রম করবে না বলে তিনি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ জাতিসংঘ সদর দফতরে জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষ সম্মেলন-২০১৪ এর অধিবেশনে ‘ন্যাশনাল এ্যাকশন এ্যান্ড এম্বিশন অ্যানাউন্সমেন্ট’ শীর্ষক অধিবেশনে এক বিবৃতিতে একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য অভিযোজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অবনতিশীল পরিস্থিতির দিকে আমাদের ঠেলে দেয়া উচিৎ নয়।

তিনি বলেন, আমাদের মতো দেশগুলোর জন্য উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই জোরালো অঙ্গীকার ও প্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে ।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের জন্যও ‘অভিযোজন’ এবং ‘ক্ষয়ক্ষতি’ ইস্যু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং সক্ষমতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইন্টেন্ডেড ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিশন (আইএনডিসি)’র ব্যাপারে প্রতিটি দেশকে পরিস্কার ঘোষণা দিতে হবে এবং এই ঘোষণা প্রমানযোগ্যভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। আইএনডিসি’র ব্যাপারে বাংলাদেশ সম্ভাব্য সব কাজ করে যাচ্ছে। তবে তা বাস্তবায়নে নতুন ও অতিরিক্ত সম্পদের প্রয়োজন হবে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজি) সভাপতি সাম কুটিয়ার সভাপতিত্বে সম্মেলনে বলিভিয়া, ব্রাজিল, তুরস্ক, কোস্টারিকা, ভেনেজুয়েলা, ক্রোয়েশিয়া, অস্ট্রিয়া ও উগান্ডার প্রেসিডেন্ট বক্তব্য রাখেন।

শেখ হাসিনা বলেন, অভিযোজন পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা জরুরি। প্রশমনের ক্ষেত্রে বেসরকারি আর্থিক সহায়তা শুধু সম্পূরক হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সবুজ অর্থনীতির জন্য বাংলাদেশের অবিরাম প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩.২ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেম (এসএইচএস) এবং ১.৫ মিলিয়ন ইমপ্রুভড কুক স্টোভ (আইসিএস) রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ১০ বছর মেয়াদি একটি ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্রাটেজি এ্যান্ড এ্যাকশন প্লান’ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দুর্যোগ সহনীয় বিভিন্ন ধরনের শস্য উদ্ভাবন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অসহায় ও স্বল্পোন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ পর্যন্ত অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য নিজস্ব সম্পদ থেকে ৩৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে।

তিনি বলেন, অব্যাহত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশে লাখ লাখ মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও লবণাক্ত পানির প্রবেশ আমাদের উপকূলীয় এলাকাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের গম ও ধান (বোরো) উৎপাদন হুমকির সম্মুখীন। বহু মানুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবনধারণ পদ্ধতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে জিডিপি ২ থেকে ৩ শতাংশ কম হচ্ছে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন-২০১৪’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইপিসিসি চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র কে. পাচাউরি এবং সাবেক মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট আল গোর।

-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত