1057
Published on সেপ্টেম্বর 18, 2014
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের আগে সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কোন বিধান ছিল না। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান লংঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।’
সরকারি দলের সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি’র এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে জেনারেল জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ও তাঁর ছোটবোন শেখ রেহানা জার্মানিতে ছিলেন বলে ওই সময় প্রাণে বেঁচে যান। তাঁরা দুই বোন দেশে ফেরার চেষ্টা করলে জিয়া সব সময় বাঁধা দিয়েছে। তারা বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। এ সময় বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার ও গণতন্ত্রকে পুনর্প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁরা বিশ্ব জনমত সৃষ্টির চেষ্টা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দলের কাউন্সিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাঁকে দলের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করে। শত বাঁধা অতিক্রম করে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ২৮ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.)-এর মাজার জিয়ারত করেন। ২৯ মে রাতে ট্রেনে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। পথে বন্যায় একটি ব্রিজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা আটকা পড়েন। সকালে ব্রিজটি ঠিক হলে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে এসে জানতে পারেন জিয়া চট্টগ্রামে নিহত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকাগামী সকল ট্রেনের যাতায়াত বন্ধ করে দেয়া হয়। আমরা ট্রেন থেকে নেমে রবিউলের বাসায় যাই সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে নৌকায় চড়ে ভৈরবে আইভি রহমানের বাবার বাড়িতে গিয়ে উঠি। ট্রেনে অনেক যাত্রী আমাদের দলের তাই ছোট ছোট গ্রুপ করে একেক গ্রুপ একেক বাড়িতে উঠি। কথা হয় যে, সকলে আইভি রহমানের মায়ের কাছে যাব, সেখান থেকে ঢাকায় যাব।’
তিনি বলেন, ভৈরব পৌঁছবার পর পরের দিন তিনি একটি বিবৃতি লিখে মোস্তফা মোহসীন মন্টুর হাতে দিয়ে ঢাকায় পাঠাতে বলেন। যার মূল বক্তব্য ছিল ‘দেশ সংবিধান অনুসারে চলবে এর কোন ব্যত্যয় যেন না ঘটে অর্থাৎ অন্য কোন সেনা কর্মকর্তা যেন ক্ষমতা দখল না করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ট্রেন চালু হলে তাঁরা ঢাকায় ফিরে আসেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে দেশে প্রতিদিন কার্ফ্যু ছিল। রাত ১০/১১ টার পর বাইরে বের হওয়া যেতো না। যাতায়াত করা খুবই কঠিন ছিল। তাই তাদের দিনে দিনে ঢাকায় ফেরার ব্যবস্থা করতে হয়েছিল।
ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি’র অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর তাঁর পরিবারের কেউ যাতে আর ক্ষমতায় আসতে না পারেন, এ জন্য বাধা সৃষ্টি করতে বারবার আঘাত হানা হয়েছে। কিন্তু একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে মাথা নত করিনি। দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হলে জেল-জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করতে হবে।
-বাসস