502
Published on আগস্ট 5, 2014নেপালের জ্বালানি মন্ত্রী তাঁর বাংলাদেশি সমকক্ষের সঙ্গে জলবিদ্যুৎ বানিজ্যসহ জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবেন।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, তাঁর (নেপালের জ্বালানি মন্ত্রী) সফরকালে উপআঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতার আওতায় দুই দেশের সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ বিভাগের(বাংলাদেশ)পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন জানিয়েছেন, অনেক আগে থেকেই নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ-নেপালের যুগ্মসচিব পর্যায়ে বৈঠকে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি, নেপালে যৌথ বিনিয়োগে জল বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প ও জ্ঞানের আদান প্রদানের বিষয়ে আলোচনা হয়।
নেপালের জ্বালানি মন্ত্রীর সফরকালে এই বিষয়ে একটি সমঝোতা স্বারক সই হতে পারে বলে জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক।
বুধবার বেলা ১১টায় হোটেল সোনারগাঁয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বৈঠকে নেপালের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন রাধা কুমারী গাওয়ালী অন্যদিকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন বিদ্যুৎ জ্বালানী এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করবেন নেপালের জ্বালানি মন্ত্রী। সমঝোতার আলোকে নেপাল-বাংলাদেশের সচিব পর্যায়ে একটি যৌথ স্ট্রিয়ারিং কমিটি এবং একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি দুই দেশের বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে বিভিন্ন বিষয় সুপারিশ করবে। একই ধরনের কমিটি ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, নেপাল ৮০ হাজার মেগাওয়াটের জল বিদ্যুত উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলে মাত্র ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। বিনিয়োগ অভাবে দেশটির রাজধানী কাঠমুন্ডুতেই দৈনিক ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হয়।
নেপাল রাজনৈতিক অস্থিরতা চলায় এতদিন বিনিয়োগকারিরা সম্মত হচ্ছিল না। এখন এই অস্থিরতা কমে গেছে। অন্যদিকে নেপাল সরকার বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে চাইছে। নেপাল সরকার চাইছে দ্রুত বিদ্যুত প্রকল্পগুলোর কাজ শুরু করতে। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার চিন্তা করছে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর নেপালে দু’টি বিদ্যুৎ প্রকল্প করছে। একটি আপার(উজান) কর্নালী এবং অন্যটি আপার মাছরাঙ্গি। এর একটি ৫০০ মেগাওয়াট অন্যটি ৬২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। জিএমআর বাংলাদেশের কাছে এই বিদ্যুৎ বিক্রির প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ের সম্মতি জানিয়েছে।
বাংলাদেশের পাওয়ার সেক্টরের মাস্টার প্লান অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সাড়ে ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক নেপাল থেকেই এর চেয়ে অনেক বেশি আমদানির সুযোগ রয়েছে। তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেয়ে জলবিদ্যুৎ আমদানি অথবা নেপালে বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য অনেক সাশ্রয়ী হতে পারে।