602
Published on জুলাই 16, 2014তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধীদের যথাযথ সুযোগ-সুবিধা দেয়া গেলে তারাও নিজেদের দেশের সোনার সন্তান হিসেবে প্রমাণ রাখতে পারবে। এ প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী দেশের বালক বালিকাদের সাফল্য যথাযথভাবে তুলে না ধরার জন্য সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য এটি খুবই দুঃখজনক সংবাদপত্রগুলোতে সফলতার খবর শিরোনাম হয় না বরং তারা অন্যের সমালোচনায় ব্যস্ত।’
সম্প্রতি ভারতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন ফর দ্য ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জেড-এর কর্মকর্তা ও খেলোয়াড়রা আজ সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিখ্যাত অটিজম বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা হোসেন পুতুল, সংস্থার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, পৃষ্ঠপোষক ও বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ প্রফেসর আবুল বারাকাত, সংস্থার প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম এবং জেনারেল সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মুকসেদুর রহমান বক্তৃতা করেন।
এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে অ্যাম্বসেডর এট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান শিকদার এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা ভারতের মাটিতে এ জয়কে বড়ো ধরনের অর্জন বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী সংস্থা গঠনে সংস্থার সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে একে চমৎকার ভাবনা হিসেবে উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে তাঁর সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, তাঁর সরকার ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে জাতীয় প্রতিবন্ধী কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ, নারী ও শিশু এবং যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধীদের কল্যাণের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। রাজধানীতে প্রতিবন্ধীদের জন্য হোস্টেল নির্মাণের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে রাজধানী ঢাকার বাইরেও এ ধরনের হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের শারীরিক প্রতিবন্ধীর তালিকা প্রণয়নে জরিপ চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, তাদের ভাতা দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরি এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত কোটা রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত সময়ের বাইরেও অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজধানীতে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি বিশেষ ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে তারা সব ধরনের খেলাধুলার চর্চা করতে পারবে। এ ধরনের ক্রীড়া কমপ্লেক্স পর্যায়ক্রমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও নির্মাণ করা হবে বলে তিনি জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশে একটি অটিজম একাডেমী প্রতিষ্ঠা করবে। এতে প্রতিবন্ধীরা তাদের মেধা বিকাশ ঘটানোর সুযোগ পাবে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি প্রতি বছর শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের আঁকা ছবি দিয়ে করা ঈদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ড জনগণের কাছে পাঠাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধীদের জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাদের জন্য সুযোগ করে দেয়া গেলে তারা ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সব সময় চমৎকার অবদান রাখতে পারবে।
তিনি বলেন, তাদের উৎসাহ যোগানো রাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি প্রতিবন্ধীদের জন্য সিএসআর কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর প্রতিও আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশনে এক কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন। তিনি প্রতিবন্ধীদের আশ্বাস প্রদান করে বলেন, সরকার তাদের সারাবছর খেলাধুলার জন্য খেলার মাঠ নির্মাণ করে দেবে। তিনি আরো বলেন, ভারতে অনুষ্ঠিতব্য এশীয় প্রতিবন্ধী ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশনে অংশগ্রহণে সরকার সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য তিন জাতি ক্রিকেট আয়োজনে সরকার সহায়তা দেবে।
সায়মা হোসেন পুতুল ভারতের ক্রিকেট টুর্নামেন্টে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জয়লাভে বাংলাদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশনকে অভিননন্দন জানিয়ে তাদের বিজয়ের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে দলের সকল খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা ভারতে বিজয়ী তাদরে ট্রফি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধী বিষয়ক বাংলাদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন ভারতের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে তিনটি ম্যাচে ২-১ জয়লাভ করে। ২২ থেকে ২৭ জুন ভারতের গোয়ালিয়র, ফিরোজাবাদ ও আগ্রায় অনুষ্ঠিত হয়ে।