৭,৮৩৯ কোটি টাকার ছয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দিল একনেক

579

Published on জুলাই 15, 2014
  • Details Image

মোট প্রকল্প বরাদ্দের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ৪শ’ ৪১ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্যের পরিমাণ ২ হাজার ৩শ’ ৯৭ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা। প্রকল্প ৬টির মধ্যে ৪টি নতুন প্রকল্প এবং ২টি সংশোধিত প্রকল্প। ৫টি প্রকল্প সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এবং বাকি প্রকল্পটি সরকারি ও প্রকল্প সাহায্য দিয়ে বাস্তবায়ন করা হবে।

আগারগাঁও এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সব প্রকল্পের অনুদোমন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল অনুমোদন দেয়া প্রকল্পগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকদেও ব্রিফ করেন।

সভায় গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে ৩ টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এগুলো হচ্ছে, পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ ঢাকা বিভাগীয় কার্যক্রম-২, পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় কার্যক্রম-২ এবং “পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ চট্রগ্রাম-সিলেট বিভাগীয় কার্যক্রম-২। প্রকল্প তিনটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৭শ’ ১৭ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড জুলাই, ২০১৪ থেকে জুন ২০১৮ এর মধ্যে প্রকল্প ৩টি বাস্তবায়ন করবে।

সভায় জানানো হয়, ২০২০ সালের মধ্যে দেশের সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে হলে মোট ৩,২৬,২৬৩ কি.মি. বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন থাকতে হবে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে প্রয়োজনীয় ৯৪,৫৪৯ কি.মি. লাইনের মধ্যে ৭১,৫০০ কি.মি. বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে রাজশাহী-রংপুর বিভাগে প্রয়োজনীয় ৮৪,১৫৩ কি.মি. লাইনের মধ্যে ৬১,৩৭৬ কি.মি. বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে এবং চট্রগ্রাম-সিলেট বিভাগে প্রয়োজনীয় ৭৭,৪২৭ কি.মি. লাইনের মধ্যে ৬৬,৩০০ কি.মি. বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে।

প্রকল্প ৩টি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৫ টি বিভাগে ২৬,১৯০ কি.মি. নতুন বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করা হবে এবং ২৮১০ কি.মি. বৈদ্যুতিক লাইন নবায়ন/পুনর্বাসন করা হবে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮৯৪০ কি.মি. নতুন বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ ও ১০৬০ কি. মি. বৈদ্যুতিক লাইন নবায়ন/পুনর্বাসন করা হবে। রাজশাহী-রংপুর বিভাগে ৭৭০০ কি. মি. নতুন বৈদ্যুতিক লাইন ৮০০ কি.মি. বৈদ্যুতিক লাইন নবায়ন/পুনর্বাসন করা হবে। সিলেট-চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৫৫০ কি.মি. নতুন বৈদ্যুতিক লাইন ও ৯৫০ কি.মি. বৈদ্যুতিক লাইন নবায়ন/পুনর্বাসন করা হবে।

সভায় বলা হয়, এর ফলে সারাদেশে বিদ্যুৎ গ্রাহক সংযোগ সাড়ে ১১ লক্ষ বৃদ্ধি পাবে বলে সভায় জানানো হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ প্রত্যেক গ্রামে যাতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় সরকার তাতে বদ্ধপরিকর।

এ ছাড়া সভায় “ইনক্লুসিভ সিটি গভর্ননেন্স প্রজেক্ট (আইসিজিপি)” শীর্ষক ২ হাজার ৪৩ কোটি টাকার অপর একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০২০ এর মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্প’র জন্য জিওবি বরাদ্দ ৫শ ৪৫ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাইকা ২ হাজার ৩শ ৯৭ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা থাকবে।

দেশের ৪টি নতুন সিটি কর্পোরেশন নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, রংপুর ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্ধারিত ৫টি সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মৌলিক নাগরিক সেবা সমূহের পরিবৃদ্ধি করা হবে। সিটি কর্পোরেশন সমূহের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধার সৃষ্টি হবে বলেও সভায় জানানো হয়।

প্রকল্পের আওতায় সিটি কর্পোরেশনের অধীনে বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে ইনক্লুসিভ ধারণা প্রবর্তনের মাধ্যমে নাগরিকদের সেবার মানকে মানসম্পন্ন ও বেগবান করা হবে। ই-গভর্ণেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণের সফটওয়্যার স্থাপন, চলমান কম্পিউটার কার্যক্রম ও জনসেবায় ক্ষুদে বার্তা পদ্ধতিও এ প্রকল্পের আওতায় করা হবে বলেও সভায় জানানো হয়।

সভায় “নরসুন্দা নদী পুনর্বাসন কিশোরগঞ্জ পৌরসভা সংলগ্ন এলাকা উন্নয়ন (২য় সংশোধিত)” এবং “অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) শক্তিশালীকরণ (১ম সংশোধিত)” শীর্ষক অপর দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, সিটি কর্পোরেশনগুলো যাতে জনবান্ধব হয় এবং সিটি কর্পোরেশনগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, উন্নত ড্রেনেজ সুবিধা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যকস্থাপনা যাতে বাস্তবায়িত হয় এবং সেই সাথে যাতে করে ওয়াইফাইসহ আইসিটি সুবিধা যাতে জনগণ পায় সে জন্যই এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।

মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন “২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৯৫ ভাগ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে। এডিপির জন্য ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ৬০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৫৬ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা বাস্তবায়িত হয়। অর্থ বছরের শুরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলে এ হার বেড়ে যেত। মাট ২৫ টি মন্ত্রণালয় ৯৬ ভাগ এর উপরে এডিপি বাস্তবায়ন এবং ৭ টি মন্ত্রণালয় ৯১ ভাগ এর উপরে এডিপি বাস্তবায়ন করেছে।

সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদমন্ত্রী মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ. মান্নানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত