534
Published on জুন 2, 2014পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশে হত্যা ক্যুর রাজনীতি শুরু হয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এর মূল হোতা ছিলেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলেন মুশতাক আর তার হাত ধরে সেনা প্রধান হওয়া, ৩ মাস না যেতেই রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সায়েমকে অস্ত্রের মুখে সরিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সেনা প্রধান উভয় পদ দখল করেন জিয়াউর রহমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জোর গলায় বলে জিয়া দেশে গণতন্ত্র দিয়েছিল। তিনি দেশে কারফিউ গণতন্ত্র দিয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, ‘১৯৭৫ থেকে ৮৬ সালের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দেশে প্রতি রাতে কারফিউ ছিল। তথন লোকে বলতো জিয়া দেশে কারফিউ গণতন্ত্র দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আজ সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কার্য নির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ এবং সঙসদীয় দলের যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও সংসদীয় দলের সদস্যরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
জিয়াউর রহমানের হাতে সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য এবং কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, “রাষ্ট্রপতি হলাম চক্রের” হাত থেকে অনেক দিন বাংলাদেশ মুক্ত হতে পারেনি।
তিনি বলেন, যে সংগঠন আন্দোলন করে, সংগ্রাম করে দেশের উন্নয়নের জন্য তাদের যে আন্তরিকতা থাকে, উড়ে এসে জুড়ে বসা লোকদের সেই আন্তরিকতা থাকে না। ক্ষমতায় বসে তাদের ভোগ করার প্রতি দৃষ্টি থাকে”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের অঙ্গীকার আছে। আমরা স্বাধীনতা এনেছি। দেশকে গড়ে তোলা, আতœনির্ভরশীল জাতি হিসাবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”
দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যারা করে তাদের এই চিন্তাই করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের ভাগ্যের উন্নতি ঘটাতে হবে এটাই লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন বিএনপি ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল। নির্বাচন বানচালের জন্য তারা ১৫০ জন লোককে পুড়িয়ে মেরেছে। বাসে, ট্রেনে, অফিসে তারা জ্বালাও পোড়াও চালিয়েছে। দেশের প্রশাসন পুলিশ, সেনাবাহিনী ঐক্যবদ্ধ থাকার কারণে তারা সফল হতে পারেনি। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে।
কোন রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তার দায়-দায়িত্ব কে নিবে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে নির্বাচনে ৪০ ভাগ ভোট পড়েছে সেই নির্বাচনকে অবৈধ বলা যায় কিভাবে ? পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও এ পরিমাণ ভোট পড়ে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যে সব উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু করা হয়েছিল বিএনপি জামায়াত ২০০১ সালে সরকার গঠন করে সব বন্ধ করে দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময় পদ্মা সেতু প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও তা বন্ধ করে দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ষড়যন্ত্রের পর পদ্মা সেতুর নির্মন কাজ শুরু হয়েছে। “ আল্লাহর রহমতে আমরা পদ্মা সেতুর নির্মান কাজ শুরু করে দিয়েছি। এর পেছনে অনেক সড়যন্ত্র ছিল। সেগুলো একে একে মোকাবেলা করে নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতুর নির্মান কাজ শুরু করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, অসন্মান করার চেষ্টা হয়েছিল তাদের সেই চেষ্টা ব্যার্থ হয়েছে”।
তিনি বলেন, আমরা আর পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে চাই না। আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন হয়েছে। আমরা সরকার গঠন করেছি। এর আগে যে উন্নয়ন করেছি তার একটা ধারাবাহিকতা থাকবে। ২০১৯ সালের আগেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সরকার দেশের মানুষের কাজে লাগে এটা অনেকের পছন্দ নয়। মানুষ ভালো থাকলে তাদের অন্তর জ্বালা শুরু হয়ে যায়। কোন অগনতান্ত্রিক সরকার আসলে স্যুট বুট পড়ে রেডি হয়ে যান।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭০ ও ’৭৩ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসনে উপ নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়েছিলেন তাদের কেউ কেউ এখন আনকন্টেস্টে নির্বাচনের সমালোচনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জামায়াত নির্বাচন করতে পারবেনা এই দুঃখে বেগম জিয়া নির্বাচনে আসেননি। বিএনপি নির্বাচনে না আসলে, অন্য দলের প্রার্থী না থাকলে বিনাপ্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচনতো হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসায় দেশের মানুষ হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে। যে যার কর্মস্থলে সুষ্ঠুভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। সেই ব্যাবস্থা আমরাই করে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ জানে দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে হবে। কারন এদল দেশকে স্বাধীন করেছে ।
রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকার চলমান উন্নয়ন কাজ পর্যবেক্ষণ করার জন্য দলীয় সংসদ সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এমন কোন জায়গা নেই। মানুষের কাছে এসব তুলে ধরতে হবে।