480
Published on মে 27, 2014আজ টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্থানীয় সময় বিকেলে শীর্ষ পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর জাপানী সমকক্ষ শিনজো আবের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।
আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো গভীর করার লক্ষ্যে সার্বিক অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ঐকমত্য হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, শীর্ষ বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিআইজি-বি) ধারণার বিকাশে তাঁর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই প্রতিশ্র“তির জন্য আমি জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে ও তাঁর সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
৫টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৫তম ওডিএ ঋণ প্যাকেজ অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাপানের সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
শেখ হাসিনা বলেন, শিনজো আবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় তারা অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় প্রায় সকল বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এ গঠনমূলক আলোচনায় আমি খুবই সন্তুষ্ট।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের আমন্ত্রণে তিনি একটি মহান দেশ ও সূর্যোদয়ের ভূমি সফর করছেন। তিনি বলেন, জাপানে আসার পর থেকে আমার প্রতিনিধিদল ও আমি উষ্ণ আতিথেয়তা ও সৌজন্যবোধে অভিভূত।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ইতোমধ্যে জাপানী প্রধানমন্ত্রী এ্যাবে ও মাদাম এ্যাবেকে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ, আমার সরকার এবং আমি ঢাকায় তাদের স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবো।’
যুক্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষর ও নোট বিনিময়ের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি বিরাট অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় দেশ। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এবং প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে জাপান বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিআইজি-বি) ধারণা বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে। এ ধারণা বাস্তবায়নে জাপান ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ৬শ’ বিলিয়ন ইয়েন অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাবে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদারে তিনি আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি একটি সার্বিক অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় মতবিনিময় করেছি। এর মধ্যদিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আমি মনে করি।
শিনজো এ্যাবে বলেন, রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিষয় জাপান এবং বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আলোচনা শুরু করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি ‘পিস বিয়ারিং সেন্টার’ প্রতিষ্ঠায় জাপান জ্ঞানভিত্তিক সহায়তা দেবে।
পরমাণু শক্তি খাত সম্পর্কে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা এবং টোকিও অভিজ্ঞতা বিনিময় ও ফুকুশিমা পারমাণবিক প্রকল্পের দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ এবং এ শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে সংলাপ শুরু করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতন্ত্র আরো বিকশিত হবে বলে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
আনুষ্ঠানিক আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম, এ্যাম্বাসেডর এ্যাটলার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান শিকদার, ইআরডি সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি মাহবুবুল হক শাকিল উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধান প্রবেশ পথে পৌঁছলে শিনজো এ্যাবে তাঁকে স্বাগত জানান। পরে তারা আনুষ্ঠানিক আলোচনা বসেন।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরের পর উভয় প্রধানমন্ত্রী সেটি বিনিময় করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও তার জাপানের সমকক্ষ ফুমিও কিশিদা নোট স্বাক্ষর ও তা বিনিময় করেন।
শীর্ষ পর্যায়ে অনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা আকাসাকা প্রাসাদে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)