497
Published on এপ্রিল 1, 2014আজ মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী করা হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে দলের প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক বাদানুবাদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে বিদ্রোহী প্রার্থীদের তৎপরতা কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে বিঘ্নিত করেছে। যা নিতান্তই অনভিপ্রেত। দেশে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক বাস্তবতার সংকটের উত্তরণ ঘটলে নির্বাচনকালীন যে কোনো ধরনের অসহিষ্ণুতা ও অস্বচ্ছতা দূর হবে।
‘নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার ও কারচুপির করেছে আওয়ামী লীগ’- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বলেন, আমাদের বহু মন্ত্রীর এলাকায় পর্যন্ত আমাদের প্রার্থীরা হেরে গেছেন। পীরগঞ্জে বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। কিশোরগঞ্জ সদরে আমাদের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। গোপালগঞ্জে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। অথচ বগুড়ার একটি উপজেলায়ও আমরা জয়লাভ করতে পারিনি। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামীর বহু প্রার্থী জয়লাভ করেছে। যদি কারচুপি হয়ে থাকে- তাহলে বিএনপি ১৬৪টি উপজেলায় কি করে জয়লাভ করেছে?
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপি নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত, ভিত্তিহীন, কল্পিত, কুৎসিত মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছিলেন। বিএনপির নেতাদেও প্রতি তিনি অপপ্রচার বন্ধ, অপরাজনীতি ও মিথ্যাচারের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আহবান জানান ।
নির্বাচনে সহিংসতা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের শুরুটা ভালো হয়েছে। শেষটাও মোটামুটি ভালো হয়েছে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিভাবে করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
ভবিষ্যতে দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার চিন্তা-ভাবনা আওয়ামী লীগের রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের এই কাঠামোর নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর সরাসরি মনোনয়নের বিধান না থাকলেও দলগুলো সমর্থন জানিয়েছে। আওয়ামী লীগও তার ব্যতিক্রম নয়। যার কারণে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না- তা কোনক্রমেই বলা যাবে না।
দেশবাসী আর অতীতের বিএনপি-জামায়াত জোটের সেই দুঃশাসনের রাজত্বে ফিরে যেতে চায় না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও প্রগতির পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। দেশবাসীর প্রতি আমাদের আহ্বান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে আপনারা সাহায্য ও সহযোগিতা করুন। আমরা একদিন বাংলাদেশকে আধুনিক, উন্নত, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদসমূহের ৫ হাজার ৭৫৩টি নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন ও ৬৩ হাজার ৯৫৩ জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করায় বহু স্থানে বিএনপি প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বিএনপি নির্বাচনে জয়লাভের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ভোট কারচুপির নানাবিধ প্রশ্ন উত্থাপন করে। কিন্তু জয়লাভের পর আর কোন কথা বলে না।
ওবায়দুল কাদের নির্বাচন কমিশন ও তার অন্তর্গত কর্মকর্তা, কর্মচারী, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, র্যা ব, সেনাবাহিনী, আনসার, গ্রাম পুলিশ, পর্যবেক্ষক, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার অর্থাৎ নির্বাচন আয়োজন, পরিচালন ও সম্পাদনের দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সকলকে দেশ-মাতৃকার প্রয়োজনে যথোচিত অবদান রাখার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। পাশাপশি নির্বাচিত সকল উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানগণ ও অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থীদেরও দলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি ও এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, উপ-দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইলাসম আমিন প্রমুখ।