অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

877

Published on ফেব্রুয়ারি 1, 2014
  • Details Image

প্রধানমন্ত্রী আরো বেশী করে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অশুভ শক্তি প্রতিরোধে সমাজের প্রতিটি স্তরে জাতীয়তাবাদী চেতনার বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।

একুশে গ্রন্থমেলাকে বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রেরণার উৎস হিসাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, লেখক, প্রকাশক ও নতুন প্রজন্মের চিন্তা-চেতনার বিকাশে এই মেলার অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে এবং এখান থেকে তারা ভবিষ্যতের সঠিক দিক-নির্দেশনা লাভ করেন।

তিনি বলেন, এ বছরই বইমেলার পরিধি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে। এর লক্ষ্য এই ঐতিহাসিক স্থানকে জাতির সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত করা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমীর সভাপতি প্রফেসর এ্যামিরেটাস আনিসুজ্জামান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও সংস্কৃতি সচিব ড. রঞ্জিত বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

প্রধানমন্ত্রী পরে খ্যাতিমান মূকাভিনেতা পার্থ প্রতীম মজুমদারকে বাংলা একাডেমীর সম্মানসূচক ফেলোশিপ এবং নয়জন বিশিষ্ট কবি, লেখক, গবেষক ও শিক্ষাবিদকে সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমী চত্বর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শহীদ মিনার এলাকায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর সরকারের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন ।

প্রধানমন্ত্রী বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলা একাডেমীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলা একাডেমী বাঙালিদের বুদ্ধিবৃত্তির উন্নয়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলা ভাষার বিকাশে এ বছরে বাংলা একাডেমীর প্রকাশিত নতুন বই বাংলা ভাষায় গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন করবে।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের শত্র“দের একাডেমীর ওপর প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে। ফলে দখলদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একাডেমী ধ্বংস করে দেয়। বাধা-বিপত্তি ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো সত্ত্বেও একাডেমী বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অগ্রগতিতে নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় গ্রন্থগুলো অন্যান্য ভাষায় এবং একই ভাবে অন্যান্য ভাষার জনপ্রিয় গ্রন্থগুলোর বাংলাভাষায় অনুবাদ করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে আমাদের মাতৃভাষাকে জাতিসংঘ মর্যাদা দিতে সক্ষম হবো।

একুশের চেতনা এখন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিলুপ্তির হাত থেকে মাতৃভাষাকে রক্ষায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছে।
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, দেশের অর্থনীতি জোরদারে গ্রন্থ বাজারজাতকরা এবং সমসাময়িক বিশ্ব সাহিত্যের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে এই মেলা সহায়ক হবে।
ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে মাসব্যাপী সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, সেমিনার ও আলোচনা আমাদের মানসিক ও চেতনা গঠনে সহায়ক হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা একাডেমির কার্যক্রম জোরদারে সরকার একটি আইনী কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যেই জাতীয় গ্রন্থনীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত